সাংবাদিকদের কালো তালিকা

যে সমস্ত তথাকথিত সাংবাদিক ফ্যাসিস্ট সরকারের দালালি, গণতন্ত্র এবং দেশবিরোধী কার্যক্রমে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছে, অন্য একটি দেশের পক্ষে কাজ করেছে, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থসম্পদের মালিক হয়েছে, শেখ হাসিনার কাছ থেকে প্লট এবং পদপদবী নিয়েছে, নির্বাচনী কারচুপিতে সহযোগিতা কিংবা সমর্থন দিয়েছে, হাসিনার তল্পিবাহক প্রশাসন এবং গোয়েন্দাদের পদলেহন করেছে এবং সর্বশেষ ছাত্র-গণমানুষের আন্দোলনের বিরোধীতা করেছে ও গণহত্যাকে সমর্থন করেছে তাদেরকে সাংবাদিকতা পেশায় নিষিদ্ধ করা এবং বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো উচিত। সেই দুবৃত্তদের একটি তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো:

1. মোজাম্মেল হক বাবু, ৭১ টিভি
2. আনিসুল হক, প্রথম আলো
3. নঈম নিজাম, বাংলাদেশ প্রতিদিন
4. শ্যামল দত্ত, ভোরের কাগজ
5. আহমেদ জোবায়ের, সময় টিভি
6. সৈয়দ বোরহান কবির, বাংলা ইনসাইডার
7. স্বদেশ রায়, হাসিনার একুশে পদক পাওয়া সাংবাদিক
8. মুহাম্মদ খালেদ মুহিউদ্দিন, সাপ্তাহিক ঠিকানা, নিউ ইয়র্ক
9. সোহরাব হোসেন, প্রথম আলো
10. মাহফুজ আনাম, ডেইলি স্টার
11. মতিউর রহমান, প্রথম আলো
12. ইকবাল সোবহান চৌধুরি, ডেইলি অবজারভার
13. মঞ্জুরুল ইসলাম, ডিবিসি নিউজ
14. শফিকুর রহমান, সাবেক প্রেসিডেন্ট, জাতীয় প্রেস ক্লাব
15. ফরিদা ইয়াসমীন, জাতীয় প্রেস ক্লাব
16. সুভাষ চন্দ্র বাদল, সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট
17. প্রভাষ আমিন, এটিএন নিউজ
18. আশীষ সৈকত, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি
19. জাহেদুল আহসান পিন্টু, ডিবিসি
20. শরীফুজ্জামান পিন্টু, সাবেক দৈনিক বাংলা
21. শাইখ সিরাজ, চ্যানেল আই
22. মুন্নি সাহা, এক টাকার খবর
23. জুলফিকার আলী মানিক, সাবেক ডেইলি স্টার এবং ঢাকা ট্রিবিউন
24. ইনাম আহমেদ, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
25. শাহরিয়ার খান, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
26. আরিফুর রহমান দোলন, ঢাকা পোস্ট
27. নুরুল ইসলাম হাসিব, বাংলাদেশ পোস্ট
28. আলমগীর হোসেন, সমকাল
29. দীপ আজাদ, নাগরিক টিভি
30. এনামুল হক চৌধুরি, ডেইলি সান
31. রেজাউল করিম লোটাস, ডেইলি সান
32. সাখাওয়াত লিটন, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
33. জ ই মামুন, এটিএন বাংলা
34. ফারজানা রুপা, ৭১ টিভি
35. রাহুল রাহা, নিউজ ২৪
36. তুষার আবদুল্লাহ, এখন টিভি
37. আবুল কালাম আজাদ, বিএসএস
38. ওমর ফারুক, বিএসএস
39. ইলিয়াস খান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, প্রেস ক্লাব
40. জাফর ওয়াজেদ, পিআইবি
41. মিথিলা ফারজানা, ৭১ টিভি (বর্তমানে কানাডায়)
42. সোমা ইসলাম, চ্যানেল আই
43. সাইফুল আলম, যুগান্তর
44. মহিউদ্দিন সরকার, যুগান্তর
45. ইমদাদুল হক মিলন, কালের কণ্ঠ
46. হায়দার আলী, কালের কণ্ঠ
47. ওবায়দুল কবির, জনকণ্ঠ
48. সন্তোষ শর্মা, কালবেলা
49. আবেদ খান, সাবেক কালবেলা
50. শ্যামল সরকার, ইত্তেফাক
51. অজয় দাশ, সমকাল
52. ফরাজী আজমল, ইত্তেফাক
53. মাসুদা ভাট্টি, সাবেক জনকণ্ঠ
54. আরিফ জেবতিক, ফ্রিল্যান্সার
55. অশোক চৌধুরী, বৈশাখী টিভি
56. প্রণব সাহা, ডিবিসি
57. রাশেদ চৌধুরী, একুশে টিভি
58. জুলহাস আলম, এপি
59. ফরিদ হোসেন, ইউএনবি
60. শাহজাহান সরদার, বাংলাদেশ জার্নাল
61. ইশতিয়াক রেজা, গ্লোবাল টিভি
62. আবুল খায়ের, ইত্তেফাক
63. মাহমুদ আল ফয়সাল, এসএ টিভি
64. রাশেদ কাঞ্চন, এসএ টিভি
65. খায়রুল আলম, সাবেক ডিইউজে নেতা
66. শাহনাজ সিদ্দিকি, বিএসএস
67. মধুসুধন মন্ডল, বিএসএস
68. মাইনুল আলম, আমাদের সময়
69. দেওয়ান হানিফ মাহমুদ, বণিক বার্তা
70. মীর মোস্তাফিজুর রহমান, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
71. সাইদ ইসলাম, ইত্তেফাক
72. আলী আসিফ শাওন, ঢাকা ট্রিবিউন
73. নাদিম কাদির, সাবেক প্রেস মিনিস্টার
74. হাসান জাহিদ তুষার, হাসিনার সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি
75. আশরাফুল আলম খোকন, হাসিনার সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি
76. পার্থ প্রতিম ভট্টাচার্য, ডেইলি স্টার
77. রাজিব ঘোষ, ডিবিসি নিউজ
78. কুদ্দুস আফ্রাদ, আনন্দবাজার
79. মামুন আবদুল্লাহ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি
80. শামসুর রহমান মোমেন, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি
81. মুহিম মিজান, একাত্তর টিভি
82. শাবান মাহমুদ, আওয়ামী সাংবাদিক নেতা
83. আজিজুল ইসলাম ভূঁইয়া, সাবেক বিএসএস
84. পাভেল রহমান, ফটোগ্রাফার
85. শাকিল আহমেদ, একাত্তর
86. রামা প্রসাদ, সমকাল
87. স্বপন বসু, বিএসএস
88. মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, আওয়ামী সাংবাদিক নেতা
89. সাজ্জাদুর রহমান, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
90. অনিমেষ কর, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি
91. নীলাদ্রি শেখর, চ্যানেল আই
92. তাহসিনা জেসি, ডিবিসি নিউজ
93. নজরুল কবির, সাবেক দেশ টিভি
94. ইকবাল করিম নিশান, জিটিভি
95. সাজু রহমান, গ্রীন টিভি
96. আমিনুর রশীদ, সাবেক বাংলাভিশন
97. আশিকুর রহমান শ্রাবণ, নিউজ ২৪
98. আরাফাত সিদ্দিকি সোহাগ, এটিএন নিউজ
99. শাহনেওয়াজ দুলাল, সময়ের আলো
100. আবু জাফর সূর্য, আওয়ামী ইউনিয়ন নেতা
101. সুকুমার সরকার, ফ্রিল্যান্সার
102. ভানুরঞ্জন চক্রবর্তী, সাবেক এটিএন বাংলা
103. সুনীতি কুমার বিশ্বাস, ফ্রিল্যান্সার
104. প্রণব সাহা, চ্যানেল নাইন
105. শাহেদ সিদ্দিকী, ইন্ডিপেন্ডেন্ট টিভি
106. সাগর হোসাইন, এটিএন নিউজ
107. সোহেল হায়দার চৌধুরী, যায় যায় দিন
108. হাসনাইন খুরশীদ, দেশ টিভি
109. সুভাষ সিংহ রায়, টক শো বক্তা
110. শোয়েব বাবু, নিউজ এডিটর, ডেইলি স্টার
111. জয় দেবদাস, নিউজ ২৪
112. আশিস প্রসূন, সময় টিভি
113. দীপন নন্দী, সমকাল
114. কিশোর সরকার, ফ্রিল্যান্সার
115. জয়শ্রী ভাদুড়ি, বাংলাদেশ প্রতিদিন
116. পার্থ সারথী দাস, খবরের কাগজ
117. শাহনাজ সিদ্দিকী, বিএসএস
118. মোস্তফা কামাল, সম্পাদক, খবরের কাগজ
119. আশীস সরকার, ফ্রিল্যান্সার
120. সাইফুল ইসলাম কল্লোল, বিএসএস
121. পুলক ঘটক, ফ্রিল্যান্সার
122. দুর্জয় রায়, বাংলাদেশ পোস্ট
123. মাহমুদ মেনন, বাংলাদেশ ফাস্ট
124. মোল্লা আমজাদ, এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ার
125. সঞ্জয় সাহা পিয়াল, সমকাল
126. আনিসুর রহমান, বিএসএস
127. হাসান জাবেদ, এনটিভি
128. শবনম আজিম, একাত্তর
129. দিপক চৌধুরী, আমাদের অর্থনীতি
130. নাঈমুল ইসলাম খান, হাসিনার শেষ প্রেস সেক্রেটারি
131. গোলাম রহমান, আজকের পত্রিকা
132. সুকান্ত গুপ্ত অলক, এক টাকার খবর
133. শোয়েব চৌধুরী, এশিয়ান এইজ
134. আলতামাশ কবির, সংবাদ
135. কাশেম হুমায়ুন, সংবাদ
136. রেজোয়ানুল হক রাজা, মাছরাঙ্গা টিভি
137. সরদার ফরিদ, সাবেক বার্তা ২৪
138. শওকত মাহমুদ, সাবেক প্রেস ক্লাব সভাপতি
139. শিহাবুর রহমান, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
140. ফসিউদ্দিন মাহতাব, প্রতিদিনের বাংলাদেশ
141. সাইফ ইসলাম দিলাল, একুশে টিভি
142. চৌধুরি জাফরউল্লাহ শারাফাত, দৈনিক বাংলা
143. সাজ্জাদ চিশতী, রাইজিং বিডি
144. জুবায়ের চৌধুরী, ঢাকা প্রেস
145. এস এম আবুল হোসাইন, আমার বাংলা
146. উৎপল দাস, ভোরের পাতা
147. আসাদুজ্জামান সম্রাট, আমাদের নতুন সময়
148. সালেহ বিপ্লব, আমাদের নতুন সময়
149. মির্জা মেহেদী তমাল, বাংলাদেশ প্রতিদিন
150. এনামুল কবীর রুপম, চ্যানেল আই
151. জাকারিয়া কাজল, সাবেক যমুনা
152. জুনায়েদ শাহরিয়ায়, চ্যানেল ২৪
153. শেখ জামাল, দৈনিক মুখপাত্র, স্বেচ্ছাসেবক লীগ
154. শংকর মৈত্র, চ্যানেল এস
155. মাহমুদুর রহমান খোকন, সাবেক করতোয়া
156. মোস্তফা চৌধুরী, অগ্রসর
157. সোহেল সানি, বাংলাদেশ প্রতিদিন
158. রুহুল আমিন রাসেল, বাংলাদেশ প্রতিদিন
159. মাহমুদ হাসান, বাংলাদেশ প্রতিদিন
160. ঝর্না মনি, ভোরের কাগজ
161. শংকর কুমার দে, জনকণ্ঠ
162. দেবাশিষ চক্রবর্তী (উত্তম চক্রবর্তী), জনকণ্ঠ
163. তপন বিশ্বাস, জনকণ্ঠ
164. শেখ মামুনুর রশীদ, যায় যায় দিন
165. শাহেদ চৌধুরী, সমকাল
166. তপন দাস, সমকাল
167. দুলাল আহমেদ চৌধুরী, মানবকণ্ঠ
168. ফারুক আহমেদ তালুকদার, আজকালের খবর
169. শামিম সিদ্দিকী, আলোকিত বাংলাদেশ
170. আলম হোসেন খান, সংবাদ প্রতিদিন
171. কল্যাণ সাহা, চ্যানেল আই
172. নজমুল হক সরকার, দৈনিক বর্তমান
173. মোতাহার হোসেন, দৈনিক বর্তমান
174. তাকী মুহাম্মদ জুবায়ের, বিটিভি
175. জাফর আহমেদ, খোলা কাগজ
176. কিবরিয়া চৌধুরী, জাতীয় অর্থনীতি
177. দীপক চৌধুরী, আমাদের অর্থনীতি
178. কিশোর কুমার সরকার, আজকালের খবর (ভারত)
179. উম্মুল ওয়ারা সুইটি, দেশ রূপান্তর
180. রফিকুল ইসলাম রতন, স্বদেশ প্রতিদিন
181. আশরাফ আলী, সাবেক নয়া দিগন্ত
182. আব্দুল মজিদ, ডিপ্লোম্যাট ডটকম
183. পিনাকী রায়, ডেইলি স্টার
184. আব্দুল কাইয়ুম তুহিন, চ্যানেল ২৪
185. সালিম সামাদ, এশিয়ান এইজ
186. জুলফিকার আলী, দ্যা বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড
187. দীপক আচার্য, সাউথ এশিয়ান টাইমস
188. কেরামত উল্লাহ বিপ্লব, এটিএন বাংলা
189. নাজমুল আশরাফ, টিবিএন২৪
190. সাইফুল ইসলাম, বৈশাখী টিভি
191. জিহাদুর রহমান, বিটিভি
192. ঝুমুর বারী, একাত্তর
193. আরিফ হাসান, দেশ টিভি
194. অখিল পোদ্দার, ইটিভি
195. অঞ্জন রায়, সাবেক ইটিভি
196. মনির হোসেন লিটন, একাত্তর
197. ইরতিসাম আব্বাস মৌ, মাছরাঙ্গা
198. রাশেদ আহমেদ, মাছরাঙ্গা
199. সৈয়দ আশিকুর রহমান, আরটিভি
200. আঙ্গুর নাহার মন্টি, সাবেক কালবেলা
201. রাজু হামিদ, নাগরিক টিভি
202. আরেফিন ফয়সাল, চ্যানেল আই
203. শামীমা আক্তার, দেশ টিভি
204. জয় প্রকাশ, বৈশাখী টিভি
205. সঞ্চিতা শর্মা, বৈশাখী টিভি
206. জাহিদুর রহমান খান, এসএ টিভি
207. নাসির উদ্দিন সাথী, মাই টিভি
208. খায়রুজ্জামান কামাল বিএসএস
209. সাজ্জাদ হোসেন সবুজ, প্রেস মিনিস্টার ওয়াশিংটন
210. আশিক চৌধুরী, প্রেস মিনিস্টার লন্ডন
211. কানাই চক্রবর্তী, বিএসএস
212. অনুপ কুমার খাস্তগীর, বিএসএস
213. কবির আহমেদ খান, বিএসএস
214. শুকুর আলী শুভ, ডিআরইউ
215. মাঈনুল ইসলাম, জিটিভি
216. গোলাম মুজতবা ধ্রুব, বিডিনিউজ ২৪
217. জুলফিকার রাসেল, বাংলা ট্রিবিউন
218. হারুনুর রশীদ, ডিডব্লিউ ঢাকা
219. মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল, জাগো নিউজ
220. রেজানূর রহমান, চ্যানেল আই
221. আশীষ কুমার দে, পিটিবি নিউজ
222. জয়ন্ত আচার্য, ভিনিউজ
223. শুকলাল দাস,দৈনিক আজাদী, চট্টগ্রাম
224. এস এম আবুল হোসেন, সাবেক বাংলারবাণী
225. আনোয়ার হক, সাবেক সময় টিভি
226. সাজ্জাদ আলম তপু, যমুনা টিভি
227. রিজভী নেওয়াজ, চ্যানেল আই
228. শফিকুল ইসলাম, বাংলা ট্রিবিউন
229. শামীমা আক্তার দোলা, নিউজ নাউ বাংলা
230. নজরুল কবীর, বাংলা টিভি
231. মুফদি আহমেদ, নতুন সময় টিভি
232. আব্দুর রহিম হারমাছি, নিউজ বাংলা
233. রহমান মোস্তাফিজ, সারাবাংলা ডট কম
234. নজরুল ইসলাম মিঠু, জার্মান নিউজ এজেন্সি, ডিপিএ
235. আরিফ সোহেল, উত্তরন

‘ফুটা কইরা দিমু’- কর্নেল ইমারত


কর্নেল ইমারত হোসেন। ৩৫ দীর্ঘ মেয়াদি  কোর্স। ইনি ২০০৯ সাল থেকে আজ অবধি সেনাবাহিনীতে চাকরি করেননি। RAB, BGBতেই তার চাকরি। মানুষ হত্যা করে, অনিয়ম -দুর্নীতি করেই তিনি মেজর থেকে কর্নেল হয়েছেন।  RAB-3তে চাকরি করার সময় আলোচিত বিএনপি নেতা কমিশনার চৌধুরী আলমের গুমের অপারেশনের একটি গ্রুপের কমান্ডার ছিল সে। এছাড়া সে বহু বিএনপি নেতাকে গুম এবং পায়ে গুলি করে পঙ্গু করে দিয়েছে । তার নামে একটা শ্লোগান ছিলো….ফুটা কইরা দিমু, RAB-3-এ থাকাকালীন ইমারত এবং তার অধিনায়ক কর্নেল রফিক মিলে মতিঝিলের বিভিন্ন ক্লাব থেকে মাসোহারা নিতেন। শাপলা চত্ত্বরের অপারেশন এর সময় সে বহু মাদ্রাসা ছাত্রদেরকে মেরেছে বলে নিজ মুখে তার সহকর্মীদের নিকট উঁচু গলায় নিজেকে জাহির করেছে/ স্বীকার করেছে।

এছাড়া ২০১৪ সালে বিজিবির ডিজি মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদের নির্দেশে ইমারত জামাত বিএনপির উপর তান্ডব চালায়। চট্টগ্রামে বিজিবির অধিনায়ক থাকার সময় সে জামাত-শিবিরের অনেক নেতা কর্মীকে হত্যা করে। গাজীপুর বিজিবির অধিনায়ক থাকার সময় তিনি এবং তার আত্মীয় প্রতিমন্ত্রী জাহিদ রাসেল মিলে বহু জমি এবং ফ্যাক্টরী দখল করে। তার এই কাজে সহায়তা করে তৎকালীন বিজিবি প্রধান মেজর জেনারেল সাফিন। এটা সবার জানা যে – জেনারেল সাফিনকে প্রতি রাতে মদ, মেয়ে সাপ্লাই দিতো এই ইমারত হোসেন। 

বিজিবিতে থাকা অবস্থায় ইমরাত তার গৃহকর্মীর সাথে জবরদস্তি যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে ধরা পড়লেও তার কোন কিছু হয়নি! শুধু গৃহকর্মী নয় গাজীপুরে থাকা অবস্থায় বহু গার্মেন্টস কর্মীদের সাথেও অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে এই কর্নেল। কর্নেল হতে যে নুন্যতম স্টাফ কলেজ সেটাও তার নেই!? শুধু আছে আওয়ামী ব্যানার…. সে আহসানুল্লাহ মাস্টারের জামাই এবং প্রতিমন্ত্রী জাহিদ রাসেলের বোনের জামাই!!!!! বর্তমানে সে কুষ্টিয়া সেক্টর কমান্ডার বিজিবিতে কর্মরত। যা এখন চোরাচালানকারীদের স্বর্গরাজ্য। সে ধান্ধায় আছে স্পেশাল নোটশীটের মাধ্যমে ব্রিগেডিয়ার হবার জন্য। অবশ্য সেটা সম্ভব হয়, কারন বর্তমান সেনাপ্রধান টাকার বিনিময়ে এ রকম ২-৫ জনকে প্রতিটি প্রমোশন বোর্ডে সুপারিশ করে থাকে। এমন কুখ্যাত অপরাধীদের জন্য আজ আমাদের প্রিয় সেনাবাহিনী তার দেশ সেবার মহান ব্রত থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে ।

র‌্যাবের কসাই লে. কর্নেল আহসানুল কবির

লে. কর্নেল আহসানুল কবির। একজন দুর্নীতিবাজ, চরিত্রহীন এবং মানবতা লংঘনকারী আওয়ামী অফিসার। ২০০৯ থেকে ২০২৩ সময়কালে যে কয়জন খুনী এবং স্বেচ্ছাচারী আওয়ামী অফিসার আছে, তারমধ্যে অন্যতম আহসানুল কবির। ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহের ইন্টারোগেশন সেলে নিরীহ বিডিআর সৈনিকদের থেকে জোর করে স্বীকারোক্তি আদায় করতে গিয়ে কয়েকজন সৈনিককে মেরে ফেলার মধ্য দিয়ে সে তার হাত রক্তাক্ত করে, এবং পরবর্তীতে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে বদলী হয়ে হাত আরো পাকা করে। RAB-1-এ কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি ‘কসাই’ নামে পরিচিত ছিলেন। অনেক মানুষকে গুম খুন করলেও তার একটা বড় অপারেশন হলো গার্মেন্টস কর্মী নেতা আমিনুল ইসলাম হত্যা। তিনি ২০১২ সালে আমিনুল ইসলামকে আশুলিয়া থেকে তুলে নিয়ে আসেন এবং হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়। ২০১৪ সালে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদকে জোর করে সিএমএইচে ভর্তি করার টিমে অন্যতম ভূমিকায় ছিলেন আহসানুল। ঐ সময়ই আর এক কুখ্যাত অপরাধী ছিল ডিজিএফআইয়ের তৎকালীন ডিজি মেজর জেনারেল আকবরের সান্নিধ্যে আসেন। পরবর্তীতে জেনারেল আকবরের হাত ধরে ডিজিএফআইতে আসেন ২০১৬ সালে। এখানে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি ঢাকার বড় বড় ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা নিতেন।

পরবর্তী ডিজি ডিজিএফআই মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীনের স্ত্রীর সাথে আহসানুলের সখ্যতা গড়ে উঠে এবং তারা প্রচুর অবৈধ সম্পদের মালিক হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তিনি ঢাকা এবং ঢাকার আশ পাশের এমপি ক্যান্ডিডেডদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নেন এবং এর ভাগ তিনি মেজর জেনারেল আবেদীনকেও দেন। যোগ্যতা না থাকা স্বত্তেও তিনি ৪র্থ বার স্টাফ কোর্স করেন, যা সেনা আইন পরিপন্থী। দ্বিতীয় বিবাহ করলে সেনা আইনে পদোন্নতি না হওয়ার কথা থাকলেও আহসানুলের বেলায় সে নিয়ম চলে না! এই ডাকু শত অপরাধ, অনিয়ম করলেও কোন শাস্তি হয় না, কারণ তিনি লেফটেনেন্ট জেনারেল ওয়াকারের আত্মীয় এবং সাবেক সেনাপ্রধান (শেখ হাসিনার ফুফা জেনারেল মোস্তাফিজের পাড়াত ভাই)। এই সুবাদে আহসানুল নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর আত্মীয় হিসেবে প্রচার করতে পছন্দ করেন। তার জীবন যাপন যে কোন শিল্পপতির জীবন যাপনকেও হার মানায়।

আহসানুলের সম্পদের পাহাড়ের সামান্য কিছু খতিয়ান- উত্তরাতে ২টি বাড়ি, বসুন্ধরাতে প্লট, বনানীতে ফ্লাট, নামে বেনামে নূর আলীর সাথে ব্যবসা, মানব পাচার, এয়ারপোর্টের চোরাকারবারি ব্যবসা কি নাই তার।  একজন সেনা কর্মকর্তা এত অপরাধ স্বত্ত্বে তার কোন শাস্তি হয় না, গোয়েন্দা রিপোর্ট কাজ করে না। এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ আছে যে, সেনাবাহিনীর চোখ গত ১৪ বছর যেন অন্ধ হয়ে আছে! তবে জানা গেছে যে, এহেন কাজে লিপ্ত থাকায় আহসানের কোর্সমেটরা তার থেকে দুরত্ব বজায় রাখে। সেনাবাহিনীর মত এমন একটি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান এদের মতো গুটিকয়েক অমানুষের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছে। এ থেকে মুক্তি না পেলে এ বাহিনীকে টিকিয়ে রাখা সত্যিই কঠিন ব্যাপার।

বাংলাদেশ সরকারের ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন স্যাংশন

ডেস্ক রিপোর্ট
মানবাধিকার হরণের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারের ৪ উর্ধতন সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারী করেছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। এরা হলেন লেফটেনেন্ট জেনারেল এস এম মতিউর রহমান, মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মো. খায়রুল বাশার, দু’জন অতিরিক্ত মহা পুলিশ পরিদর্শক মনিরুল ইসলাম এবং শাহাবুদ্দিন খান। এ সংক্রান্ত গোপনীয় পত্র ইতোমধ্যেই ঢাকার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌছেছে।

১) লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম মতিউর রহমান। ১৩তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের কর্মকর্তা। ইনি রাষ্ট্রদূত হবার অপেক্ষায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত আছেন। ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারীর একদলীয় নির্বাচনের পরে বিরোধী দল দমনে অংশ হিসাবে সাতক্ষীরায় সরকারী বাহিনী কতৃক ক্রাক ডাউন করা হয়। ঐ অভিযান পরিচালনা করা হয় ৫৫ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল এস এম মতিউর রহমানের নেতুত্বে। তখন বাংলাদেশের পুলিশ, আর্মি, বিজিবি সহ বিভিন্ন বাহিনী ও ভারতের ৩৩ তম ডিভিশনের যৌথ অভিযানে সাতক্ষীরা জেলার ৫টি থানায় আট শত মানুষ নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই জামায়াতে ইসলামী পরিবারের সদস্য ছিলেন। বুলডোজার দিয়ে মানুষের বাড়িঘর ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হয়, গরু ছাগল পুড়িয়ে হত্যা হরা হয়, নারীদের সম্ভ্রমহানির ঘটনাও ঘটে।

২) মেজর জেনারেল আবুল হাসনাত মোঃ খাইরুল বাশার। ২০তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের কর্মকর্তা। রাষ্ট্রদূত হবার অপেক্ষায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত  আছেন। বিজিবিতে থাকাকালে ইনি তৎকালীন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজের পলাতক ভাইদের জন‍্য ভুয়া এনআইডি এবং পাসপোর্ট তৈরী করে দিয়েছিলেন। এছাড়াও বিজিবির পোস্টিংয়ে থেকে মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত ছিলেন।

৩) মো. মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত মহা পুলিশ পরিদর্শক: বিসিএস পুলিশ সার্ভিসের ১৫তম ব্যাচের সদস্য। গোপালগঞ্জের বাসিন্দা। ২০১৪/১৫/১৬ সালে বাংলাদেশে কৃত্রিম জঙিবাদ সৃষ্টি করে তা দমনের নামে শত শত হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন। তাছাড়া মার্কিন নাগরিক অভিজিত হত্যাকান্ডও তারই নির্দেশে ঘটে। আনসারউল্লাহ নাটক সহ জঙ্গি নাটকের হোতা। রিমান্ডে নির্যাতন, গায়েবী মামলা, দলবাজি, গুম, খুন, ক্রস ফায়ারের মূল নির্দেশদাতা।

৪) মো. শাহাবুদ্দিন খান, অতিরিক্ত মহা পুলিশ পরিদর্শক: বিসিএস পুলিশ সার্ভিসের ১৫তম ব্যাচের সদস্য। ঝিনাইদহের বাসিন্দা। পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বরিশালে ৬শ কিলিংয়ের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

উল্লেখ্য, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে গত বছর বিশ্ব মানবিধিকার দিবস ১০ ডিসেম্বর প্রতিষ্ঠান হিসাবে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এবং এর সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারী করে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ। নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা হলেন, তৎকালীন র‌্যাব ডিজি ও বর্তানে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সাবেক ডিজি ও আইজিপি বেনজির আহমেদ, র‌্যাবের অতিরিক্ত ডিজি খান মোহাম্মদ আজাদ, তোফায়েল মুস্তাফা সারোয়ার, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মোহাম্মদ আনওয়ার লতিফ খান। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন করে চার জনের অন্তর্ভুক্তির খবর আসে।

হাইকোর্ট দেখাচ্ছেন বিচারপতি গোবিন্দ

০ মামলা দিচ্ছেন কথায় কথায় ০ রুদ্ররোষে এলাকা ছাড়া বহু হিন্দু পরিবার

বিশেষ সংবাদদাতা
কথায় কথায় হাইকোর্ট দেখান সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর। একের পর এক মামলা দায়ের করছেন নিজ এলাকার সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে। স্বীয় প্রভাব-প্রতিপত্তির জানান দিতে মামলা দিচ্ছেন নানা ছুতোয়। তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ মানব বন্ধন করেছেন। গোবিন্দের নিগ্রহের শিকার অন্তত ৩ হাজার মানুষ গণস্বাক্ষর করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রপতির দরবারে আবেদনও করেছেন। প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছেও দরখাস্ত করেছেন। কিন্তু বিচারপতি অপসারণে বর্তমানে কোনো ‘সুপ্রিম কাউন্সিল‘ নেই। এ কারণে কোনো দফতরই বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একটি সাংবিধানিক পদে থেকেও নিজ এলাকার নিরীহ মানুষদের ওপর করে যাচ্ছেন যা ইচ্ছে তাই।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, মাদারিপুর রাজৈর উপজেলার কদম বাড়ি ইউনিয়নটি হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা। এখানকার ৯৩ ভাগ মানুষই সনাতন ধর্মাবলম্বী। অপেক্ষাকৃত পশ্চাদপদ এই এলাকায় বেড়ে ওঠা বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী থেকে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি নিযুক্ত হন। ২০১২ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে তিনি ‘স্থায়ী‘ হন। এর পর থেকেই পদ-পদবির দম্ভে ধরা কে সরা জ্ঞান করতে থাকেন তিনি। পাড়া-প্রতিবেশী, গ্রামের মানুষকে তুচ্ছ কারণে জড়াচ্ছেন মামলায়। নিরীহ,শান্তিপ্রিয় মানুষের মাঝে সৃষ্টি করছেন বিভেদ, কোন্দল,হানাহানি। বহু নিরপরাধ মানুষ গোবিন্দ চন্দ্রের রুদ্ররোষে পড়ে যাপন করছেন দুর্বিষহ জীবন। এসব ক্ষেত্রে কখনও সরাসরি ব্যবহার করছেন নিজ বিচারিক এখতিয়ারকে। কখনওবা হাইকোর্টকে ব্যবহার করে এখতিয়ার বহির্ভুতভাবে করছেন ক্ষমতার অপব্যবহার।নিজ জেলার বিচারক এবং স্থানীয় প্রশাসনের ওপর অবৈধ প্রভাব বিস্তার করছেন।তার অবৈধ কর্মকান্ডের দালিলিক প্রমাণসহ প্রেসিডেন্টের দফতরসহ বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করলেও মিলছে না কোনো প্রতিকার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ছাত্রজীবন থেকেই রাজৈর আড়িয়াকান্দি গ্রামের নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন জনের সঙ্গে দলাদলিতে নেতৃত্ব দিতেন। ঢাকায় সুপ্রিম কোর্ট বারের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকায় তিনি ধরাকে সরা জ্ঞান করতেন। স্থানীয় সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারগুলো তার ভয়ে থাকতো তটস্থ। নিরীহ মানুষ-জনের ওপর তার অত্যাচারের সীমা ছাড়িয়ে যায়। তবে ওয়ান-ইলেভেন সরকার আমলে তিনি কিছুদিন গা ঢাকা দিয়ে থাকেন। কারণ এ সময় পুলিশ বাদী হয়ে ২০০৮ সালের ২৮ আগস্ট গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিরুদ্ধে একটি জিডি (নং-৯৯৫) করে। তদন্ত শেষে জিডিটি (নন জি আর ৭৮/৮) ১৮৮ ধারামতে মামলায় পরিণত হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করলে গোবিন্দ চন্দ্র প্রতিবেশী দেশ ‘ভারত-কোটায়’ বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভের জন্য তদবির শুরু করেন। কিন্তু বাঁধ সাধে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখিত মাদারিপুর আদালতে চলমান ওই নন-জিআর মামলা। পরে মাদারিপুর জেলা আইনজীবী সমিতির তৎকালিন সভাপতি মো:ওবাইদুর রহমান খানকে মামলাটি সমঝোতার ভিত্তিতে নিষ্পত্তি করে দেয়ার অনুরোধ জানান।ওই আইনজীবী তখন বাদীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ফৌজদারি কার্যবিধির ২৪১ (ক) ধারা অনুযায়ী মামলাটি নিষ্পত্তির আদেশ নেন।ওই আদেশ দ্রুততার সঙ্গে ফ্যাক্সযোগে সুপ্রিম কোর্টে পাঠানোর পর গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে শপথ নিতে সক্ষম হন। বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ার প্রথম ২ বছর তিনি অনেকটাই চুপচাপ ছিলেন। কিন্তু ২০১২ সালে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে স্থায়ী হওয়ার পর রাজৈরে তিনি স্বরূপে আবির্ভুত হন। ঢাকা থেকে বিচারপতির প্রটোকল নিয়ে এলাকায় প্রবেশ করেন। উপরন্তু স্থানীয় জেলা আদালতের বিচারক,থানাপুলিশ প্রশাসন,এসপি,জেলা প্রশাসক,ইউএনওসহ মাঠপর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ব্যতিব্যস্ত রাখেন নিজের প্রটোকলের কাজে। তার ফুটফরমায়েশ খাটতে গিয়ে তারাও এখন বিরক্ত।

মানুষকে রেখেছেন দৌড়ের ওপর

বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের নিপীড়নে বহু সংখ্যালঘু পরিবার এখন অতিষ্ট। গোবিন্দের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে অনেকে এখন এলাকা ছাড়া। অনুসন্ধানে জানা যায়,বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে রাজৈর কদমবাড়ি ইউনিয়নের বড়খোলা গ্রামের মৃত হারান রায়ের পুত্র সদানন্দ রায়কে পুলিশ নির্যাতন করান। আড়িয়াকান্দি গ্রামের ৭ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি সুখচাঁদ মধুর ছেলে সঞ্জয় মধুকে মিথ্যা মামলা (নম্বর- জি.আর.১৬১, তারিখ-১৬/০৯/২০১৫) দিয়ে হাজত খাটান। এর আগে ২০১৪ সালের ১২ মে বড়খোলা গ্রামে হরেন্দ্র নাথ মজুমদারের পুত্র গুরুপদ মজুমদারকে রাজৈর থানা পুলিশকে দিয়ে অমানুষিক নির্যাতন এবং বেধড়ক মারপিট করান।২০১৫ সালের ৫ এপ্রিল আড়–য়াকান্দি গ্রামের গুরুপদ বিশ্বাসের পুত্র দিলীপ বিশ্বাসকে পুলিশ দিয়ে ডেকে ভয়ভীতি দেখান।

২০১৩ সালে নটাখোলা হাইস্কুল ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে সভাপতি হন কদমবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস।গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে প্রভাব খাটিয়ে তাকে বাদ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে সভাপতি পদে বসান।এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে বিধান বিশ্বাস রিট করলে বিচারপতি গোবিন্দ প্রভাব খাটিয়ে রিটটি খারিজ করান।

উপজেলা প্রশাসনে বিচারপতির প্রভাব খাটিয়ে চাচাতো ভাই স্বপন কুমার ঠাকুরকে বেআইনিভাবে আ.ন.ব.উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগে বাধ্য করেন।একইভাবে এ স্কুলে ক্লার্ক পদে নিয়োগ দেন অভিজিৎ রায়কে।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও নাক গলান এই বিচারপতি।২০১৬ সালের ৭ মে কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী বিধান বিশ্বাসের মনোনয়নপত্র বাতিলে উপজেলা রিটার্নি অফিসারের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন।তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর পক্ষে ক্যাম্পেইন এবং মোবাইলে ভোট চান। ওইদিন তার করা ফোনকলের প্রমাণ রয়েছে প্রতিবেদকের হাতে।

অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বাবু যোগেশ চন্দ্র বসুর জমির ওপর দিয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থে রাস্তা নির্মাণের জন্য প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। জোরপূর্বক এলজিইডিকে দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করান।

গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর নিজ চাচীর শ্রাদ্ধ্য অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের অপমান-অপদস্ত করেন। পুলিশ দিয়ে হয়রানি করেন।ব্যক্তিগত শত্রুতার বশবর্তী হয়ে তিনি নিজ বাড়ি সংলগ্ন হরিপদ বিশ্বাসের পুত্র বিআরডিপি’র কর্মচারি স্বপন কুমার বিশ্বাসকে কদমবাড়ি থেকে দূরবর্তী কালকিনি উপজেলার সাহেবরামপুরে বদলি করান।সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রধান শিক্ষক যুগল পদ বসুকে তিনি কারণদর্শানোর নোটিশ দেন।অন্যত্র বদলির হুমকি দেন।

ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে  সিরিজ মামলা :
রাজৈর কদম বাড়ি ইউনিয়ন পরিষদে বার বার নির্বাচিত জনপ্রিয় ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের সঙ্গে অনেকটা গায়ে পড়ে বিবাদে জড়ান গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর। ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে মাদারিপুর জজ কোর্টে বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত একটি মীমাংসিত মামলা (জি.আর.নং-১৩৪/২০১০) খারিজ হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে ‘কল ফর’ দেন। ২০১৪ সালের ২৯ জানুয়ারি  বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর এবং মো: রেজাউল হকের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার পুরো নথি হাইকোর্টে এনে ৮ বছর আটকে  রাখেন। পরবর্তীতে শুনানি কিংবা আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে গত ২৭/০৮/২০১৯ তারিখে রায় দিয়ে নতুন মামলা (সিআর ৮০২/২১) দায়ের করান। মীমাংসিত একটি মামলাকে জিআর মামলায় (১৩৪/১০) রূপান্তর করেন। নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস যাতে শপথ বাক্য পাঠ করতে না পারেন সে লক্ষ্যে মামলাটি দেয়া হয়। পরে এ মামলায় আবারও জামিন নিতে হয়। এ সময় বিধান বিশ্বাসের ওকালত নামাও তিনি হাইকোর্টে জমা দেয়ার সুযোগ গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর দেন নি। হাইকোর্ট থেকে রায়ের ফাইল ২০২১ সালের নভেম্বরে মাদারিপুর বিচারিক আদালতে পাঠান ইউপি নির্বাচনের পূর্ব মুহূর্তে। বিধান বিশ্বাস যাতে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না  পারেন। ২০১৬ সালের ১ সেপ্টেম্বর গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর নিকটাত্মীয়কে ‘বাদী‘ করে কদমবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে একই দিন ৩টি মামলা করান। রাজৈর ইউনিয়ন ভূমি সহকারি কর্মকর্তাকেও বাধ্য করেন বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করতে।  মামলাগুলো হচ্ছে যথাক্রমে : (১) রাজৈর থানা মামলা নং- ১/২০৬, জিআর ২০৬/১৬, (২) রাজৈর থানা মামলা নং-৪/২০৯, জিআর ২০৯/১৬ এবং (৩) তথ্য-প্রযুক্তি আইনে করা শাহবাগ থানার মামলা নং-৭/১৬, জিআর ৩১৮/১৬) । এসব মামলা দায়েরের জন্য ওই দিন বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর রাজৈর থানা ওসি, ইউএনওকে অন্তত: ১৬ বার টেলিফোনে চাপ প্রয়োগ করেন। এই প্রতিবেদনের হাতে সেই কললিস্টও রয়েছে।

বর্তমানে সিআর মামলা (৮০২/২১) মামলায় প্রভাব বিস্তার করে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনটিও বাদীর পক্ষে নিয়ে  আসেন গোবিন্দ। এতে বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আবারও গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। কোনো নিরপেক্ষ কর্মকর্তা কিংবা সংস্থা দ্বারা মামলাটির পূনঃতদন্ত হলে প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে। মীমাংসিত মামলাটির পূণঃতদন্তের বিষয়ে বিধান বিশ্বাস গত ১৬/১১/২০২১ তারিখ প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।

বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর স্বীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট মামলা নিজের বেঞ্চে এনে ৮ বছর ধরে ঝুলিয়ে রেখেছেন। অথচ এ মামলার বাদী-বিবাদীগণ উভয়পক্ষ  মামলা না চালানোর বিষয়ে বিচারিক আদালতে আবেদন করলেও মূল নথি হাইকোর্টে থাকার কারণে শুনানি করতে পারছেন না। বিবাদীরাও মামলা থেকে নিষ্কৃতি পাচ্ছেন না। মামলাটিতে বাদীর কোনো স্বার্থ না থাকলেও গোবিন্দ তার নিজ স্বার্থে মামলাটি জিইয়ে রেখেছেন।

মন্দিরের লাইট চুরি এবং ৪টি সরকারি গাঠ আত্মসাতের অভিযোগে রাধাকান্ত বরকে দিয়ে ২টি মিথ্যা মামলা (নং-০১/১৬, তাং-০১/০৯/২০১৬ এবং মামলা নং-০৪/১৬, তারিখ-০১/০৯/২০১৬) করান। যদিও বাদী রাধাকান্ত বর নিজেই একটি চাম্বল গাছ কাটেন। এ মামলায় কদমবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাস আসামি করা হয়। তিনি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। জনগণ ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করলেও তারা এখন সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ মামলাটিকে ব্যবহার করে গোবিন্দ স্বীয় জিঘাংসা চরিতার্থ করছেন। জোর চেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে দিয়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে বিধান বিশ্বাসকে অপসারণের।

শুধু বিধান বিশ্বাসই নন, গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর কদম বাড়ি ইউনিয়নের নটাখোলা গ্রামের সুনীতি গোলদারের ছেলেকে প্রভাব খাটিয়ে হাজতে পাঠান। দিঘির পাড় গ্রামের হরিমোহন গাইনের পুত্র মন্টু গাইনকে মিথ্যা মামলায় (নং-সি.আর.৩৩১/১৫, তারিখ-৩০/০৮/২০১৫) হাজতে পাঠান।

২০১৬ সালের ২ সেপ্টেম্বরের ঘটনা। কদমবাড়ি ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান নিহার বৈদ্য ভিজিডি’র চাল বিতরণ করেন। কার্ডধারী দরিদ্র মানুষ নগদ অর্থের জন্য ভিজিডি’র কিছু চাল বিক্রি করে দেন দোকানে। এ ঘটনায় রঙ চড়িয়ে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর  রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট) দিয়ে দোকান থেকে ভিজিডি’র চাল ‘উদ্ধার’ দেখান। এ ঘটনায় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসকে জড়ানোর চেষ্টা করেন। তাকে মামলার আসামি করতে পুলিশ প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন। পুলিশ যখন অনুধাবন করলো যে, ঘটনার সঙ্গে ওই ইউপি চেয়ারম্যান কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট নন এবং এটি তদন্তেও প্রমাণ করা সম্ভব হবে না- তখন পুলিশ মামলা করতে অস্বীকৃতি জানায়। এ ঘটনায় মাদারিপুর জেলা পুলিশ সুপার, ইউএনও এবং ওসির বিরুদ্ধে রুল জারি করে আদালতে এনে দাঁড় করিয়ে রাখার হুমকি দেন গোবিন্দ বাবু।

এই বিচারপতির ক্রমাগত হয়রানি, অবৈধ প্রভাব, বিচারিক ক্ষমতার অপব্যবহার ও দাপটে অতিষ্ট মানুষ ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাজৈর উপজেলা সদরে এক প্রতিবাদ সভা ও মানব বন্ধন করেন। ওই মানব বন্ধনে ভুক্তভোগীসহ অংশ নেন ৪/৫ হাজার মানুষ। জাতীয় দৈনিকসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে এ সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর ফলে এক বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের কারণে উচ্চ আদালতের অন্য বিচারপতি এবং দেশের বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়।

মানব বন্ধনে অংশ নেয়া নিপীড়িত মানুষ বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি, প্রধান বিচারপতি, আইনমন্ত্রী, এমনকি প্রধানমন্ত্রী বরাবর করুণ মিনতি জানান। কিন্তু এ ঘটনার জের ধরে গোবিন্দ রাজধানীর শাহবাগ থানায় কদম বাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান বিধান বিশ্বাসের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা (নম্বর-৭/৩১৭, তারিখ-০৬/০৯/২০১৬) করান। সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট সুজিত চ্যাটার্জিকে বাদী করে করা এ মামলায় বিধান বিশ্বাস এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। কৃতজ্ঞতাস্বরূপ সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পিকে তিনি সরকারের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করেন।

গোবিন্দের নাম ভাঙিয়ে স্বজনদের চাঁদাবাজি :
গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের উচ্চ পদ-পদবির ভয় দেখিয়ে স্থানীয় নিরীহ হিন্দু পরিবার ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। চাঁদা দিতে কেউ অস্বীকৃতি জানালে তাকে দেখানো হয় মামলায় জড়ানোর ভয়। চাঁদাবাজির অভিযোগে কদমবাড়ির জনৈক বিপ্লব রায় বাদী হয়ে ২০১৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর রাজৈর থানায় একটি মামলাও করেন। ওই মামলায় গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর পরিবারের ১০ সদস্যকে আসামি করা হয়।এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন, অনির্বাণ ঠাকুর, নিপূণ ঠাকুর, নির্মল ঠাকুর, প্রতীক ঠাকুর, সবুজ ঠাকুর, তন্ময় ঠাকুর,স্বপন ঠাকুর,  দেব কুমার বর,প্রমথ ঠাকুর ও কুমুদ রঞ্জন ঠাকুর। এ মামলায় গ্রেফতার এড়াতে আসামিরা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। বিচারপতি এম.মোয়াজ্জাম হোসেন এবং বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের তৎকালিন ডিভিশন বেঞ্চ ওইবছর ২০ সেপ্টেম্বর তাদের জামিন দেন। গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর প্রভাব খাটিয়ে স্বজনদের জামিন নিশ্চিত করেন। শুধু তাই নয়, আসামিদের নিরাপত্তা প্রদানে গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর একটি রিটও করান। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক এবং বিচারপতি জে এন দেব চৌধুরীর তৎকালিন ডিভিশন বেঞ্চ গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের স্বজনদের নিরাপত্তা দেয়ার নির্দেশনা দেন। পুলিশের মহাপরিদর্শক, জেলা পুলিশ সুপার, রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজৈর থানার অফিসার ইনচার্জ এবং পুলিশের উপ-পরিদর্শক সদানন্দ বৈদ্যকে এই নির্দেশ পালন করতে বলা হয়। একই সঙ্গে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিরুদ্ধে  ‘বেআইনিভাবে’ আয়োজন করা মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী ৩৭ জনের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে বিবাদীদেরকে নির্দেশ দেন। বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের কর্তৃত্ব, সম্মান ও মর্যাদাকে হেয় করে আয়োজন করা বেআইনি সমাবেশ (মানববন্ধন) ঠেকাতে ১৩ বিবাদীর ব্যর্থতাকে কেন তাদের ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতা ও পেশাগত ও বিধিবদ্ধ দায়িত্বে অবহেলা হিসেবে ঘোষণা করা হবে না- রুলে সেটিও জানতে চাওয়া হয়। জন প্রশাসন সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, খাদ্য সচিব, বন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, খাদ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, মাদারীপুরের ডিসি, পুলিশ সুপার, রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজৈর থানার ওসি এবং উপ-পরিদর্শক সদানন্দ বৈদ্যসহ বিবাদীদেরকে  রুলের জবাব দিতে বলা হয়। রিটের শুনানিও করেন গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের অনুগত আইনজীবী এবিএম সিদ্দিকুর রহমান মিয়া।

বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের উৎপীড়ন নিপীড়নে অতিষ্ট হয়ে প্রতিকার চেয়ে স্থানীয় অন্তত ৩ হাজার  মানুূষ গণস্বাক্ষর করেছিলেন। স্বাক্ষরকারীদেরকেও এখন রাখা হয়ছে হামলা, মামলাসহ বহুমাত্রিক হয়রানির মধ্যে। স্থানীয়দের স্বাক্ষর সম্বলিত আবেদন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ,আইনমন্ত্রী এবং প্রধান বিচারপতি বরাবর পাঠানো হয়। কিন্তু অদ্যাবধি গোবিন্দের বিরুদ্ধে সরকার কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি। উল্টো গণস্বাক্ষরে অংশগ্রহণকারীরা এখন গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের পক্ষ থেকে যে কোনো মুহুর্তে যেকোনো ধরণের ক্ষতির শিকার হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।

জানা গেছে, সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী মামলার রিভিও এখন আপিল বিভাগে বিচারাধীন। ২০১৪ সালে এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারপতিকে অপসারণের এখতিয়ার সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল থেকে জাতীয় সংসদের হাতে নিয়ে আসা হয়। বিষয়টি নিয়ে বিদ্যমান সাংবিধানিক মামলাটি এখন রিভিউ পর্যায়ে রয়েছে। ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা করে করা রিভিউ পিটিশনটি এখন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে গত ৮ বছর ধরে বিচারপতি অপসারণের এখতিয়ার সম্পন্ন কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর আত্মজিঘাংসা চরিতার্থ করার লক্ষ্যে যা ইচ্ছে তা-ই করে যাচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি,প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়,প্রধান বিচারপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের বিচারপতি  নিযুক্ত হওয়ার ‘যোগ্যতা’ প্রশ্নে রয়েছে নানা অভিযোগ। ছাত্র জীবনে তিনি ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতি করতেন। আইনজীবী হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট বারে অন্তর্ভুক্ত হন ১৯৯৪ সালে। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এলে ভোল পাল্টে তিনি বিরাট আওয়ামীলীগার হয়ে যান। ওই বছরই তিনি আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের আনুকূল্য নিয়ে ২০০৯ সালে তিনি বিচারপতি নিযুক্ত হন ভারতের আশীর্বাদে। এ ক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করেন আরেক বাম রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত তৎকালিন আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ। বিচারপতি নিযুক্ত হওয়ার আগে অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ছিলেন অনেকটা ‘বটতলার উকিল’। সে সময় সরকারপন্থী আইনজীবী সংগঠনে ভীড়ে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতেন। এটিকে ‘সরকার ঘনিষ্টতা’র ব্যাকগ্রাউন্ড দেখিয়ে বাগিয়ে নেন বিচারপতি পদ। বিচারপতি পদ ধারণ করলেও ব্যক্তিগতভাবে তিনি অত্যন্ত সাম্প্রদায়িক। আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন)র অন্যতম ডোনার গোবিন্দ। একই সঙ্গে কাজ করেন পার্শ্ববর্তী দেশের  বিচার বিভাগীয় ইনফর্মার হিসেবে।

তৃতীয় বিভাগ পাওয়া যে ক’জন আইনজীবী হাইকোর্টে বিচারপতি নিয়োগ লাভ করেন গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর তাদের একজন। শিক্ষা জীবন সম্পর্কে জীবনবৃত্তান্তে খুব বেশি তথ্য তিনি উল্লেখ করেন নি। কোন্ পরীক্ষায় কি ফলাফল তিনি অর্জন করেছেন-উল্লেখ করেন নি। উল্লেখিত তথ্য অনুসারে তিনি এলএলবি তৃতীয় বিভাগ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। স্নাতক উত্তীর্ণ হয়েছেন তৃতীয় বিভাগে। তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে ১৯৮৪ সালে সেলিম-দেলোয়ারদের সঙ্গে তিনিও আহত হয়েছেন-এমন তথ্য উল্লেখ করতে ভোলেন নি।এতে তার পড়াশুনায় বিঘ্ন ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংবাদিকতা বিভাগে তিনি পড়াশুনা করেছেন মর্মে দাবি করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয়ে এলএলবি করেন। আইনজীবী হিসেবে তার করা বেশ কিছু মামলার রায় ‘ল’ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

১৯৬৩ সালের ১৫ মে মাদারিপুর রাজৈর উপজেলার আড়িয়াকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম প্রয়াত গুরুবর ঠাকুর। মাতা-মধুমালা ঠাকুর। তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ছিলো তথৈবচ। ২০২১ সালের ১১ ডিসেম্বর তার বোন প্রমাদা সেনের শ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় পারিবারিক দৈণ্যদশার কথা নিজেই স্বীকার করেন। ছাত্রজীবনের স্মৃতি রোমন্থন করে তিনি বলেন, আমি তালপাতারই ছাত্র। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে কলম বানিয়ে, কয়লা দিয়ে কালি বানিয়ে, তালপাতায় লিখে আমার লেখা পড়া শুরু । পড়তাম আমার দিদির বাড়ীর পাশে প্রাইমারী স্কুলে। বাড়ী থেকে ছালায় (পাটের তৈরী) তালপাতা, কলম, কালির দোয়াত ও আদর্শলিপি বই ছালায় পেচিয়ে বগলে চেপে স্কুলে  যেতাম। ঐ ছালা বিছিয়ে এর উপর বসে পাঠ নিতাম।দিদির বাড়ী সীমানায় স্কুলে গিয়ে খিধে লাগলে দিদির কাছে যেতাম অথবা দিদি ডেকে নিয়ে উড়ুম(মুড়ি) খেতে দিতেন। নিজেকে একনিষ্ঠ আওয়ামীভক্ত প্রমাণ করতে ওইদিন তিনি অনেক রাজনৈতিক কথাবার্তা বলেন। বক্তৃতা শেষ করেন ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দিয়ে।

বিপুল অবৈধ সম্পদ : বিদেশে অর্থ পাচার :
নিম্নবিত্তের সন্তান গোবিন্দ যেন এখন পারিবারিক ইতিহাস ভুলে গেছেন। পদ-পদবি লাভের পাশাপাশি তিনি এখন অগাধ অর্থ-সম্পদেরও মালিক। সরকারি বাসায় থাকলেও ঢাকায় তার রয়েছে একাধিক বাড়ি, প্লট ও ফ্ল্যাট। তবে দেশের চেয়ে বিদেশেই বেশি অর্থ-সম্পদ রয়েছে তার। গোবিন্দ চন্দ্র নিজেকে সম্ভ্রান্ত ঠাকুর পরিবারে জন্ম লাভ করেছেন-মর্মে দাবি করলেও তারা প্রকৃত ব্রাহ্মণ নন। বৈরাগী বংশের উত্তরসূরী। গোবিন্দরা ৬ ভাই-বোন। বড় ভাই দুই ছেলে দুই মেয়ে রেখে পরলোক গমন করেন। গোবিন্দ প্রভাব বিস্তার করে আপন ভাতিজাকে মাদারিপুর আদালতে চাকরি দিয়েছেন। অনুগত আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পিকে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ নিশ্চিত করেছেন। গোবিন্দের চার ভাইই বসবাস করেন ভারতে। বর্ধমান জেলার রসূলপুর এবং মেমারিতে গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরসহ সকল ভাইয়ের রয়েছে বাড়ি। তাদের মাধ্যমে গোবিন্দ ঘুষ ও অপরাধলব্ধ অর্থ ভারতে পাঠান। গোবিন্দের এক ছেলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশুনা করছে। যুক্তরাষ্ট্রে ছেলের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই কোটি কোটি টাকা পাচার করেছেন। সম্প্রতি তার মেয়েও স্টুডেন্ট ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন। দুই সন্তানের মাধ্যমে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পাঠাচ্ছেন কোটি কোটি টাকা। সেখানেও তার বাড়ি রয়েছে। বিচারপতি থেকে অবসর নিয়ে তিনি যুক্তরাষ্ট্রেই স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করেছেন।  গোবিন্দদের পারিবারিক অবস্থা ভালো না থাকলেও কর্মজীবনে প্রবেশের পর তিনি এলাকায় ৭/৮ বিঘা জমি কেনেন। পৈত্রিক ভিটায় গড়েছেন অট্টালিকা। মাদারিপুর রাজৈরের এই দাপুটে গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর বিচারপতির পদ থেকে অবসরে যাবেন ২০৩০ সালের ১৪ মে।

রাষ্ট্রীয় গুম হত্যার ইতিহাসে চ্যাঞ্চল্যকর বিচারের ঘটনা ঘটছে মেক্সিকোতে

গত ২৫ আগস্ট মেক্সিকোর এক বিচারক ২০১৪ সালে সংঘটিত ৪৩ জন ছাত্রের গুম ও হত্যার ঘটনা গোপন করা ও মিথ্যা তথ্যদানের অভিযোগে দেশটির সাবেক অ্যাটর্ণী জেনারেল হিসাস মুরিলো কারামকে আটকাদেশ দেয়, এবং পুরো বিচারকালে তাকে আটকই থাকতে হবে। কারাম এক সময়ের ক্ষমতাসীন পিআরআই দলের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা ও আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত ছিল। দেশের ফেডারেল জুডিসিয়ারি কাউন্সিলের শুনানীর পরে স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেয়া হয়, ঐ ঘটনার ব্যাপারে ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় এটর্ণী জেনারেল কারাম যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তা ছিল ‘হিস্টোরিকাল ট্রুথ’।

কারামের অপরাধ হচ্ছে, ২০১৪ সালে ৩৪জন শিক্ষার্থীকে রাষ্ট্রীয় ‘গুম’ করার সাথে তার সংশ্লিষ্টতা এবং দায়িত্বে থাকাকালে এই বিষয়ে মিথ্যা তথ্য প্রদান। তার বিচার করা হবে গুম, নির্যাতন এবং বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্থ করার অভিযোগে। ঐ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে আরও ৮০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, কমপক্ষে ৫০ জন আটক হয়েছেন। এদের মধ্যে ঐ এলাকায় দায়িত্বে ছিলেন সেনাবাহিনীর এমন তিনজন সাবেক শীর্ষ কমান্ডারও আটক হয়েছেন।

দেশের ট্রুথ কমিশন ২০১৪ সালে কলেজ ছাত্রদের গুম হবার ঘটনাটিকে ‘রাষ্ট্র সংঘটিত অপরাধ’ (স্টেট ক্রাইম) হিসাবে চিহ্নিত করেছে। ঘটনা সম্পর্কে যতটুকু জানা গেছে,
২৬ জুলাই ২০১৪ আয়োতজিনাপা গ্রামীণ শহরের একটি শিক্ষক কলেজ থেকে ৪৩ জন যুবক মেক্সিকো সিটির দক্ষিণে ইগুয়ালা শহরে একটি বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নিতে যাচ্ছিল। তৎকালীন সরকারি ভাষ্য অনুযায়ী ঐ শিক্ষার্থীরা হাঙ্গামা করতে যাচ্ছে এই সন্দেহে পথে পুলিশ তাঁদের আটক করে এবং মেক্সিকোর একটি ড্রাগ গ্যাং-এর হাতে তুলে দেয়। এই মাদক ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের হত্যা করে, তাঁদের মৃতদেহ পুড়িয়ে সেগুলো নদীতে ফেলে দেয়। সেনাবাহিনী দাবী করেছিল যে, তাঁদের আটকের ব্যাপারে সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সংশ্লিষ্টতা ছিলো না। কিন্তু পরে জানা গেছে যে, ঐ তরুণদের আটকের পরে তাঁদের ভাগ করে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। এর মধ্যে কয়েক জনকে সেনাবাহিনীর স্থানীয় ঘাটিতেও নেয়া হয়। এদের কেউ কেউ বেশ কিছুদিন বেঁচেও ছিলেন। কথিত অপহরণকারী ও হত্যাকারীদের সাথে সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিলো। কিন্ত তা স্বত্বেও রাষ্ট্রীয় উচ্চ পর্যায় থেকে গুম, হত্যা, অস্বীকার এবং তা ধামাচাপা দেবার এই ঘটনাটি এখন অনেক বেশি আলোচিত।

২৫ আগস্ট মেক্সিকোর আদালতে যা ঘটেছে সেই রকম ঘটনা অহরহ ঘটেনা, তবে যা ঘটেছে, তার তাৎপর্য কেবল মেক্সিকোর জন্যেই গুরুত্বপূর্ণ নয়, সম্ভবত এর তাৎপর্য গোটা বিশ্বে ঘটা রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত গুম ও হত্যার জন্য একটি বড় মেসেজ। মেক্সিকোর এই বিচারিক ঘটনা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে যে, এই ধরণের রাষ্ট্রীয় অপরাধ কখনো তামাদি হয়ে যায়না, উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিরা তা থেকে দায়মুক্তি পেতে পারেনা, এবং ন্যায় বিচারে যারা বাধা দেয় তাঁরাও অপরাধী বলেই বিবেচিত হয়।

আমেরিকায় ঢোকার পথে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ব্যাপক জিজ্ঞাবাসাদের মুখে ফেরত পাঠাতে পারে বেনজিরকে, হতে পারে স্টৃপ সার্চের শিকার

গুরুতর মানবাধিকার হরণের অপরাধে যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ ঘোষিত বাংলাদেশের পুলিশ প্রধান বেনজির আহমদেকে জাতিসংঘের বার্ষিক পুলিশ প্রধান সম্মেলনে অংশ নিতে কঠিন শর্তে ৪৮ ঘন্টার জন্য আমেরিকার ভিসা মঞ্জুর করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি নিউইয়র্কে প্রবেশের অনুমতি পাবেন কি না তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কেননা যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা থাকলেই সবাইকে সে দেশে ঢুকতে দেয়া হয় না, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও স্বার্থে ক্ষতিকারক যে কাউকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ আটকে দেয়ার ক্ষমতা রাখেন দেশটির হোমল্যান্ড সিকিউরিটি।

নিউইয়র্কের জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আগামী ৩১ আগষ্ট ও ১লা সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠেয় পুলিশ সম্মেলনে যোগ দিতে বাংলাদেশেকে আমন্ত্রন জানানো হলে বাংলাদেশের হাসিনা সরকার এই সুবিধাটি নিয়ে আইজিপি বেনজির আহমদেকে জাতিসংঘে পাঠিয়ে তার ওপরে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া স্যাংশনকে খাট করার একটি কূটকৌশল গ্রহণ করে। প্রথম দফায় বেনজিরের ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যান করে ঢাকার যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস। এরপরে দ্বিতীয় চেষ্টায় অনেক তয় তদবীর এবং লবিয়িং চালায় বেনজির ও সেগুণবাগিচা। বাংলাদেশ সরকার যুক্তরাষ্ট্রের কাছে আপীল করে জাতিসংঘের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের করা চুক্তির অধীনে মেম্বার স্টেটের যেকোনো প্রতিনিধিকে (তার উপরে স্যাংশন থাকলেও) যুক্তরাষ্ট্র ভিসা দেয়ার নিশ্চয়তা দানের কথা, বিশেষ করে ঐ বিধানে রাশিয়া এবং ইরানের নিষিদ্ধ কূটনীতিকরাও জাতিসংঘে আসা যাওয়া করে। এই যুক্তি এবং তদবীরে ফলে কেবলমাত্র সম্মেলনস্থলে অংশগ্রহণের শর্তসাপেক্ষে দেশটির ভিসা মিলেছে বেনজীরের। অবস্থানের সময় ৪৮ ঘন্টা। তবে মেনে চলতে হবে কঠিন শর্ত, যার ব্যতিক্রম ঘটালে কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে হলে আটক হতে পারেন গুম-খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত বেনজীর আহমেদ। উল্লেখ্য, এর আগে জাতিসংঘের অধিবেশনে এসে এরূপ শর্ত ভঙ্গের অভিযোগে ভেনিজুয়েলার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আটক করা হয়েছিল নিউইয়র্কে।

মানবাধিকার হরণে নিষেধাজ্ঞা প্রাপ্ত আইজিপি বেনজীরকে ডেলিগেশন তালিকায় না রাখার অনুরোধ উপেক্ষা করে জাতিসংঘের চিফ অব পুলিশ সামিটে (ইউএনকপ) সম্মেলনের জন্য মনোনীত করে ক্ষমতাসীন হাসিনা সরকার। তাই ভিসা দিলেও বাড়াবাড়ির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে দু’দিন অবেস্থানকালে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও গোয়েন্দাদের নেটওয়ার্কে থাকবেন বেনজির। ভিসার শর্তানুসারে তিনি নিউইয়র্কে ৪৮ ঘন্টার বেশী অবস্থানের সুযোগ পাবেননা। এছাড়া নিউইয়র্কে সম্মেলনস্থল ও হোটেলের বাইরে দেশটির অন্য কোনো জায়গায় যাওয়ার, অন্য কোনো অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ বা রিসেপশনে যোগ দেয়া, বা শপিং বা সাক্ষাতের কোনো সুযোগ নেই বাংলাদেশের আইজিপি বেনজিরের। যেতে পারবেন না যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে এবং সেখানে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে। কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ৪৮ ঘন্টার বেধে দেয়া এই সময়সীমার শর্ত কিছুতেই লঙ্ঘন করতে পারবেননা বেনজির। এর ব্যতয় ঘটালে কিংবা নির্ধারিত এলাকার বাইরে গেলে অথবা যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি মনে হলে তাকে আটক করতে পারবে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। আর তখন জাতিসংঘের চুক্তির সুযোগ নিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ব্যক্তিকে কৌশলে নিউইয়র্কের পাঠানোর সুযোগটি বাংলাদেশের জন্য বুমেরাং হতে পারে।

জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে প্রবেশকালে নিউ ইয়র্ক এয়ারপোর্টে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ ও স্টৃপ সার্চ (ন্যাংটো করে তল্লাশির) মুখে পরতে পারেন বেনজির। এর আগে ভারতীয় এক কূটনীতিক দেবযানী খোবড়াগাডেকে গ্রেফতার করে স্টৃপ সার্চ করা হয়েছিল। অন্যদিকে মার্কিন প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছ থেকে শত শত চিঠি মেইল গেছে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিডিউরিটির কাছে, যাতে করে কুখ্যাত এই মানবাধিকার হরণকারীকে যুক্তরাষ্ট্রে যেন ঢুকতে না দেয়া হয়। কেননা তিনি বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে মানবাধিকার হরণ করেছেন, মানুষ খুন করেছেন, গুম করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে এসেও তার বিরোধিতাকারী বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত আমেরিকান নাগরিকদের অনেকের ক্ষতিসাধন করতে পারেন। অন্যদিকে বহুগামী বেনজির বালোদেশের অনেক সিনেমা আর্টিস্ট, ছাত্রী, প্রতিকারপ্রার্থী, রাজনৈতিক নেত্রী, নারী পুলিশ কর্মকর্তা, এমনকি পতিতাদের শয্যাসঙ্গী করেছেন বেনজির। এই তালিকায় ইডেন কলেজের শারমিন, চিত্রনায়িকা কেয়া, বিদ্যা সিনহা মীম, পরীমনি, এক এডিশনাল এসপির স্ত্রী, লাস্যময়ী পুলিশ কর্মকর্তা সোনালী সেন সহ অনেকের নাম মিডিয়াতে ঘুরছে। ফলে সন্দেহ করা হয় তিনি এইডস বা এসটিডিতে ভুগতে পারেন, যা আমেরিকায় ছড়িয়ে দিতে পারেন, এমন তথ্য জানানো হয়েছে দেশটির প্রশাসনকে। এর পাশাপাশি তিনি তার পাচার করা মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের সম্পদ উদ্ধারে আমেরিকাতে লোক ভাড়া করে অনেকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটাতেও পারেন। তাই সম্ভাব্য ভুক্তভোগিরা প্রটেকশন চেয়ে দেশটির বিভিন্ন নিরাপত্তা সংস্থার কাছে আবদন করেছেন। ফলে বেনজিরের আমেরিকা অবস্থানকালে তার চলাফেরা, যোগাযোগ, এমনকি টেলিকথপোকথন, মেইল চালাচালির উপর গোয়েন্দা নজরদারীর আবেদন জানানো হয়েছে। গ্লোবাল ম্যাগনেটস্কি আইনে স্যাংশনে থাকায় বেনজির কার কার সাথে যোগাযোগ করে লেনদেন করে তাদের উপরেও ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নজরদারী করা হতে পারে। ফলে যারাই তার কানেকশনে যাবেন, আটকে যেতে পারে তাদের সহায় সম্পদ।

মানি লন্ডারিংয়ে অভিযুক্ত হাসিনার স্বার্থ রক্ষায় তৎপর চাঁদাবাজ টিটু রহমানের নাগরিক টিভি বয়কটের ডাক

কানাডা প্রতিনিধি:
সম্প্রতি শেখ হাসিনার আরব আমিরাত সফরের সময় সেখানকার শারজাহ কোর্টে মানি লন্ডারিং মামলায় হাজির দেয়া এবং একদিনের আটকাদেশ নিয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে দাড়িয়েছেন কানাডা ভিত্তিক অনলাইন নাগরিক টিভির পরিচালক টিটু রহমান। প্রতিদিন তিনি শেখ হাসিনার পক্ষে ক্যাম্পেনে নেমেছে এই বলে যে, শারজাতে মানি লন্ডারিং হয়েছে, কিন্তু হাসিনা জড়িত নয়। তার বিয়াইকে গ্রেফতার করে প্রমান দিয়েছেন। মানি লন্ডারিং নিয়ে হাসিনাকে নাকি খামাখাই জড়াচ্ছে মহল বিশেষ। তার মতে এটি একটি প্রোপাগান্ডা মাত্র। টিটু এখন জানপ্রাণ দিয়া চেষ্টা করছে- হাসিনাকে নির্দোষ প্রমান করতে! এ নিয়ে অনেককে হুমকি ধামকিও দিয়েছে- এই প্রচারণার যারা করবে, সে নাকি তাদেরকে নির্মুল করবে। তার এ নয়া অবস্থানের পরে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, সম্ভবত কিনি মোটা অংকের বিনিময়ে সরকারের সাথে আঁতাত করেছেন।

ইতোমধ্যে তার বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য টিটু রহমান ওরফে তোঁতলা টিটু চিহ্নিত চাঁদাবাজ হিসাবে স্থানীয় কমিউনিটিতে পরিচিতি পেয়েছেন। এক সময় বাংলাদেশে ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচতে গলাকাটা পাসপোর্টে তিনি কানাডায় আসেন। সম্প্রতি একটি অনলাইনে টিভি চ্যানেল খুলে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন ‘নাগরিক টিভি’ নামে, কেননা ২০০৮ সাল থেকে ‘নাগরিক টিভি’ নামে বাংলাদেশে একটি রেগুলার স্যাটেলাইট চ্যানেল চালু আছে, যা টিভি উপস্খাপক ও পরে ঢাকা উত্তরের মেয়র মরহুম আনিসুল হক সৃষ্ট। ঐ নামটি নকল করে টিটু রহমান গোটা বিশ্বের বাংলাদেশ কমিউনিটির সাথে প্রতারণা করে আসছেন। জানা গেছে, সম্প্রতিক আলোচিত মুনিয়া হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে বসুন্ধরার গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে মুখ কুলুপ দিয়ে আছেন এই প্রতারক।

দীর্ঘদিন ধরে শেখ হাসিনার ভোটবিহীন স্বৈরশাসনের যাতাকলে পিষ্ট বাংলাদেশের জনগন যখন মুক্তির লড়াইয়ে রত, ঠিক যেসময় দেশের মানুষের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, সেই সময় প্রবাসে অবস্খানরত কয়েক অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশী শিক্ষক, সেনা কর্মকর্তা, এবং কথা বলতে চায়, এমন ব্যক্তিদের নানা কায়দায় উপস্খাপন করে টিটু রহমান তার প্রতারণার এই বাক্স খোলেন। রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেতে তোঁতলা টিটু বাংলাদেশের পরিচিত একটি টিভি চ্যানেলের নামে খোলায় অনেকেই ভুল করে এটাকে মুল টিভির শাখা মনে করা শুরু করেন। কেউ তো আর জানে না, এটি নকল মাত্র! পরবর্তীতে বিএনপি সরকারের সাথে কাজ করা এক মিডিয়া ব্যক্তির অনুকম্পায় করে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জোগাড় করে কয়েকটি টকশো আয়োজন করেন টিটু রহমান। কিন্তু তার না আছে সাংবাদিকতা বা উপস্খাপনের অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতা, না আছে সাধারণ জ্ঞান, শারীরিকভাবে তোতলা হওয়ার কারণে তিনি কথা বলতেও পারেন না, কি প্রশ্ন করতে হবে তাও জানেন না। ফলে অনুষ্ঠানের মান চলনসইও হয় না। তদুপরি কিছু মানুষ তো এটা দেখে।

দেশে সীমহীন দুর্নীতি, লুটপাট, মানি লন্ডারিং, গুম খুন ও অত্যাচারে সরকারের বিপক্ষে যখন জনগণের অবস্থান, তখন টিটু সেটাকে কাজে লাগিয়ে সরকার বিরোধী অবস্থান নেয়। বিভিন্ন টক’শোর আয়োজন করে সরকারের সমালোচনা করে লাইম লাইটে আসতে চায়। প্রথম থেকে অর্ধ শিক্ষিত তোঁতঁলা টিটুর উদ্দেশ্য ছিলো অনলাইন চ্যানেলটি ব্যবহার করে ধান্দার মাধ্যমে টাকা কামানো। তার ওই উদ্দেশ্য সফল হয় মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি হাতে নেয়ার মাধ্যমে। সাবেক এক আমলার মাধ্যমে মুনিয়া ও তার প্রেমিক বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের কিছু গোপন ছবি ও তথ্য পায় টিটু। ওই ছবি ও তথ্য নিয়ে তার চ্যানেলে নিয়মিত টকশোর আয়োজন করে বিষয়টি বসুন্ধরার নজরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং এক পর্যায়ে সফল হয়। মুনিয়া ইস্যু নিয়ে আনভীরের লোকজন যোগাযোগ করে নাগরিক টিভির সাথে। মুনিয়া ইস্যুতে চুপ থাকার শর্ত হিসাবে কানাডায় একটি স্যাটেলাইট টিভি স্টেশন বানিয়ে দেয়ার দাবি করে তোঁতলা টিটু। আনভীর রাজী হয় এবং প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ হাজার ডলার প্রদান করে টিটুকে। পরে নির্ধারিত সময়ে টিভি স্টেশন স্থাপন না করে আনভীর যোগাযোগ বন্ধ করে টিটুর সাথে। টিটু বুঝতে তার স্যাটেলাইট টিভির স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না, তাই আবারো মুনিয়া ইস্যুতে সরব হয়েছে ওই বাটপার। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়ে আনভীর কি ভাবে আরব আমিরাতে গেলো সেটা নিয়ে অনলাইন গরম করার চেষ্টা করছে, যাতে আনভীরের কাছ থেকে আরো টাকা আদায় করতে পারে।

’নাগরিক টিভি’ নামের ওই ভুয়া চ্যানেলের সাথে জড়িত ছিল তোঁতলা টিটুসহ তিন জন। বসুন্ধরার আনভীরের কাছ থেকে পাওয়া বিশ হাজার ডলারের ভাগ অন্য দুইজনকে না দিয়ে একাই হজম করে ফেলে টিটু। এনিয়ে তাদের মধ্যে গন্ডগোল থেকে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে এবং টিটুর সাথে তারা সম্পর্ক ছিন্ন করে।

টিটু রহমান দেশের বিশিষ্ট লোকজনকে ফোন করে এসএমএসের মাধ্যমে নিজেকে সরকারের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা পরিশোধ না করলে তার নাগরিক টিভির মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি করে সুনাম বিনষ্টের হুমকি দেয়। এমন কয়েকটি অনুষ্ঠানও সে করেছে।

জনগণের আবেগ নিয়ে ব্যবসা করায় প্রতারক তোঁতলা টিটুর নাগরিক টিভির ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল সবাইকে বয়কট করা উচিত বলে মতামত ব্যক্ত করেন একসময় টিটুকে প্রমোট করা ওই মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।

খাসোগির ভাগ্য বরণ করার আশঙ্কা ছিল মিতুর

বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী কন্যা পুতুলের সাবেক স্বামী মিতুকে আবুধাবীতে অপহরণ করা হয়েছিল। এমনকি নিহত সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগির মত প্রাণ হারানোর অবস্থায় পড়েছিলেন। শেষে অপহরণকারীদের চাহিদা মত অনেকগুলি সাদা কাগজে স্বাক্ষর দিয়ে ছাড়া পেয়েছিলেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ সিভিল কোর্টে বিচারাধীন মিতু জানান, এখন থেকে ৬ মাস আগে তাকে অপহরণ করেছিল আবুধাবীতে বাংলাদেশ এম্বেসির লোকজন। চোখ বেঁধে বেদম মারপিট করে। তাকে বলেছিল, মানি লন্ডারিং মামলায় শেখ হাসিনা ও তার কন্যার সংশ্লিষ্টতা নিয়ে যে সাক্ষ্য দিয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। এরপরে ৪/৫টি সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। গোটা ঘটনাটি আবুধাবীতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আয়োজন করে, যা মিতু মনে করেন তার সাবেক শ্বাশুড়ির নির্দেশমত হয়েছিল।

আদালতকে অবহিত করার পরে মিতুকে অপহরণ করে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়াকে অবৈধ ঘোষণা করে। এইরূপ কোনো বানানো কাগজ জমা দিয়ে থাকলে তা পরীক্ষা করতে সইয়ের ফরেনসিক পরীক্ষার নির্দেশ জারি করে আদালত।

এখানে উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৬ই জানুয়ারী শাজহার বুহাইরা এলাকা থেকে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় মিতু। গ্রেফতারের নেপথ্যে ছিল কাতার এবং ইরাণের সাথে তার বিপুল পরিমানে অর্থ লেনদেন। আটকের পরে মিত্রুর বাড়িঘর তল্লাশি করে অনেকগুলো ল্যাপটপ, ফোন, এবং মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে। ফোন এবং ল্যাপটক স্কান করে তাতে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের ব্যাংক একাউন্ট এবং লেনদেনের তথ্য উদঘাটন করে। সুইস ব্যাংকে অনেক কোটি কোটি ইউরো পাওয়া যায়, যা দুবাইকে মাধ্যমে করে পাঠানো হয়েছিল। মিতুকে চাপ দিয়ে পুরো অর্থ শারজাহে ফেরত আনা হয়, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় ৬.৭৮ লক্ষ কোটি টাকার সমপরিমান। এ নিয়ে অনেকগুলি মামলা দায়ের করা হয়। মিতুকে জেলে পাঠায়। তদন্তকালে মিতু ঐ অর্থ তার নয় দাবী করে, এবং তার প্রকৃত মালিক তার শ্বাশুড়ি শেখ হাসিনা ও স্ত্রী পুতুল। ঐ মামলায় তাদেরকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই কারণে মিতুর সাথে পুতুলের বিবাহ বিচ্ছিদ ঘটান শেখ হাসিনা। গত দুই বছরে শেখ হাসিনা নিজে ২ বার, রাষ্ট্রপতি হামিদকে এক বার, অর্থমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র মন্ত্রী বেশ কয়েকবার, এমনকি সেনাপ্রধানকেও আবুধাবীতে পাঠান দেন দরবার করে মানি লন্ডারিয়ের মামলা থেকে অব্যহতি পেতে। কিন্তু মামলাগুলি শারজাহ আদালতে হওয়ায় সেখানকার শাসক শেখ সুলতান বিন মুহাম্মদ আল কাসিমি নিয়মনীতিতে খুব কড়া, শরীয়া আইনে চলে সরকার, তাই কোনো তদবীবে কাজ হয় না। তবে একটি দেশের রানিং প্রধানমন্ত্রী হিসাবে কিছু প্রটোকল সুবিধা দেয়া হয়, ভার্চুয়িালি হাজিরা দেয়ার। কিন্তু কয়েকবার হাজির দিলেও শেষের দিকে তিনি আর হাজিরা দেননি , ফলে তাকে শরীরে হাজিরা দেয়ার জন্য সমন ইস্যু করে আদালত। এ সপ্তাহে ৯ই মার্চ ছিল সেই তারিখ, যাতে পাসপোর্ট জমা দিয়ে হাজিরা দেন।

ব্রেকিং নিউজ: আরব আমিরাতে শেখ হাসিনার ২৪ ঘন্টা আটকাদেশ

অর্থ পাচার দুর্নীতি মামলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ সিভিল কোর্টের একটি আদালত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী (অবশ্য কেউ কেউ তাকে বিনা ভোটের বা নিশিরাতের সরকারের প্রধানমন্ত্রী বলে সম্বোধন করেন) শেখ হাসিনাকে ২৪ ঘন্টা হাজতে আটকে রাখার নির্দেশ দিয়েছে, তার পাসপোর্টও ২৪ ঘন্টা কোর্টের কাছে আটক থাকবে।
৬ দিনের সফরে আবুধাবী গিয়ে তিনি হোটেল সাঙরিলায় অবস্থান করছিলেন। হোটেলের ঠিকানা Shangri-La Qaryat Al Beri, Abu Dhabi, Khor Al Maqta, Qaryat al Beri – Abu Dhabi – UAE, Phone: +971 2 509 8888.

তবে গতকাল বুধবার বিকালে আদালতে হাজিরা দেয়ার পর থেকে তিনি আর এই হোটেলে নেই। আজ ও কাল তার কোনো কর্মসূচি নেই। শারজাহ আদালত সূত্রে জানা গেছে, তাকে শারজাহতে অন্য একটি হোটেলে কারা কতৃপক্ষের অধীনে রাখা হয়েছে। ঐ হোটেলকে সাবজেল ঘোষণা করা হয়েছে। চারিপাশে ব্যাপক প্রহরা। এই ২৪ ঘন্টা তিনি হোটেল থেকে বের হতে পারবেন না। আওয়ামীলীগের কোনো নেতাকর্মী জানে না তাদের নেত্রী কোথায় আছে। মানি লন্ডারিং মামলায় শারজাহর সিভিল কোর্ট তাকে চুড়ান্তভাবে সতর্ক করেছে এই বলে যে, এরপর ভার্চুয়াল হাজিরা মিস করলে ওয়ারেন্ট জারী করা হবে।

1 2 3 6