ডিসি নিয়োগ নিয়ে নজীরবিহীন তুলকালাম : সিনিয়র অফিসারদের হেনস্তার পরে চেককান্ড, চলছে তদন্ত

সচিবালয় প্রতিবেদক
৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিজয়ের পরে মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তবর্তী সরকার ক্ষমতায় বসার দেড় মাসের মধ্যে দেশের ৫৯টি জেলায় জেলাপ্রশাসক পরিবর্তন করা হয়েছে। এই ডিসি নিয়োগ করতে উপযুক্ত কর্মকর্তা বাছাই করতে নানাবিধ পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকারের মধ্য দিয়ে প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করা হয়েছে। উল্লেখ্য বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের উপসচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্য হতে ডিসি পদে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা হয়ে থাকে। এবারের বিসিএস ২৪, ২৫, ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তারা বিবেচনায় ছিল।

জেলাপ্রশাসকদের পদায়ন করার সাথে সাথেই বিগত আওয়ামী আমলে বঞ্ছিত কর্মকর্তাদের একটি গ্রুপের অভিযোগ, এই নিয়োগে বিগত সরকারের আশীর্বাদপুষ্টদেরকেই বসানো হয়েছে। অসন্তোষ প্রতিবাদ থেকে বাদানুবাদ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে থাকে। এই পরিস্থিতির মধ্যে ডিসি পদায়ন প্রত্যাশী কিছু জুনিয়র অফিসাররা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বারান্দায় হৈ চৈ করে, চিৎকার ও শ্লোগান দেয়, তারা দু’জন যুগ্ম সচিবের কক্ষে ঢুকে নাজেহাল করে, এমনকি দায়িত্বরত গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তাকে মারপিট করে মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা ঘটে। প্রতিবাদকারীদের অভিযোগ, বিপুল পরিমান আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে ত্যাগী, বঞ্চিত ও যোগ্য কর্মকর্তাদের বাইরে রেখে আওয়ামী লীগ পরিবার সংশ্লিষ্ট এবং বিগত ১৫ বছরে গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদেরই আবার ডিসি পদে পুনর্বাসন করা হয়েছে। নবনিযুক্ত এসব জেলাপ্রশাসকদের নিয়োগ বাতিল চেয়ে ঢাকা, লক্ষ্মীপুর, খুলনা, নাটোর জেলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভের ঘটনাও ঘটেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৯জন ডিসির নিয়োগ বাতিল করা হয় এবং ৪ জনের রদবদল করা হয়। পাশাপাশি কর্মকর্তাদের এ ক্ষোভের বিষয়টি তদন্তে একজন সিনিয়র সচিবকে প্রধান করে পরদিনই একটি কমিটি গঠন করা হয়। ঘটনার উত্তাপ কমাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মাঠপ্রশাসনের সংশ্লিষ্ট যুগ্মসচিবকে সিলেটে বদলী করা হয়।

কিন্তু এই ঘটনার জের না কাটতেই জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইংয়ের অন্য একজন যুগ্মসচিবের কক্ষ থেকে ডিসি পদায়ন সংক্রান্ত ঘুষ লেনদেনের ৩ কোটি টাকার চেক উদ্ধারের সংবাদ ছাপা হয় প্রতিবেশী দেশের অর্থে পরিচালিত একটি বিতর্কিত দৈনিক পত্রিকায়। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় নানা রংচং মেখে সংবাদ এবং ট্রল প্রকাশ করা হয়। এরপরেই সরকার নড়েচড়ে বসে। গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। বেরিয়ে আসতে থাকে নানা কাহিনী- যা ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে ধরে নেয়ার কারণ রয়েছে। এর আগে গন্ডগোল করা অফিসারদের একজনকে ঢাকার বাইরে বদলী করা হয়। বিষয়টি নিয়ে চলছে তথ্য সংগ্রহ এবং চুলচেড়া বিশ্লেষন।

জানা গেছে, এই চেককান্ডের ঘটনাটি একটি সাজানো নাটক ছিল। যে কর্মকর্তার কক্ষ থেকে কথিত চেকটি উদ্ধার দাবী করা হয়েছে, তিনি ডিসি নিয়োগ প্রক্রিয়ার কেউ নন। তারপরও তাকে টার্গেট করে আক্রমন করা হয়েছে। সকল গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে। সেখানে তারা জানতে পেরেছেন, চেক উদ্ধারের কোনো ঘটনা এপিডি উইংয়ের কেউ দেখেওনি, জানেও না। কোনো কর্মকর্তার রুম থেকে আপত্তিকর কিছু উদ্ধার হলে বা সিজ করতে হলে কিছু নিয়ম বা প্রক্রিয়া আছে, সাক্ষীসাবুদও দরকার হয়। কিন্তু সেগুলো অনুসরণ করে দুদক, বা পুলিশকে কিছু জানানো হয়নি। কেবল কথিত সাংবাদিকের কাছেই খবরটা ছিল। ঐ সাংবাদিকের কাছে বিস্তারিত জানার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাকে চিঠি দিলে তিনি সহযোগিতা না করে উল্টো কয়েজন সমর্থককে নিয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদী প্লাকার্ড দেখান, তার সাংবাদিকতার প্রতি হুমকি হিসাবে বলার চেষ্টা করেন। অথচ ঘটনা সত্য হলে তিনি তথ্য প্রমান দিয়ে সহযোগিতা করতে পারতেন।

অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, যার একাউন্টের নামে ঐ চেক, সেই একাউন্টে ৩ কোটি টাকা তো দূরের কথা ৩ হাজার টাকাও নেই। তাছাড়া চেকটি ঐ যুগ্মসচিবের নামে ইস্যু করাও নয়, বাহক চেক মাত্র। যে ২/৩জন জেলাপ্রশাসকের পদায়নের নিমিত্ত ঐ চেক লেনদেন দাবী করা হয়েছে, তাদের কাছে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে জোরের সাথেই বলছেন, এরকম কোনো ঘটনা তাদের জানা নেই।

সাধারণ বিবেক বুদ্ধি কি বলে? ৩ কোটি টাকা ঘুস কি কেউ চেকে নেয়, বা নিতে পারে? ঐ টাকা কি কেউ তুলতে পারবে? তাছাড়া ব্যাংকে তো টাকাই নেই। তাহলে কি দাড়ালো? জিনিসটা পুরোটাই একটি বানোয়াট নাটক, এবং হাতে বানানো ষড়যন্ত্র। একটি সুত্র জানায়, এই ষড়যন্ত্র করে সফল হলে এর পরের ধাপে জনপ্রশাসন সচিবকে একটি কায়দায় ফাঁসিয়ে উৎখাত করার পরিকল্পনা ছিল।

তবে সরকারের তদন্তকারীরা সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের কল লিস্ট থেকে দেখতে পেয়েছেন, এক ভয়াবহ চিত্র। ঐ সংবাদ প্রকাশের আগে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিকের সাথে আন্দোলনকারী উপসচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তার (তার ব্যাকগ্রাউন্ডও সাংবাদিকতা) অংসংখ্য ফোন কল রয়েছে, যা থেকে অনেককিছুই অনুমান করা যায়। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তিনি তার প্রটেকশনের জন্য এখন বড় একটি রাজনৈতিক দলের বড় বড় মাথাকে ব্যবহার করছেন। কিন্তু, প্রশ্ন হলো, দলটি কি এজাতীয় ষড়যন্ত্রের সাথে জড়াবে?

শোনা যাচ্ছে, ষড়যন্ত্র দমনে সরকারের কড়া পদক্ষেপ আসছে।



কে এই কূটনীতিক নাহিদা সোবহান ?

নাহিদা সোবহান । বিসিএস ১৫ ব্যাচের পররাষ্ট্র ক্যাডারের অফিসার। পতিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ল্যান্সপেন্সারদের একজন। খুনি হাসিনা অনেক সিনিয়র অফিসারকে বঞ্চিত করে এই দলকানা মহিলাকে কানাডায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিল। হাসিনার পতনের এক মাস পেরিয়ে গেলে ও সেই অর্ডার বাতিল হয়নি, নাহিদা দ্রুত যোগ দিয়েছেন কানাডায়। নর্থ আমেরিকায় স্বৈরাচার পুণর্বাসনে গোপনে কাজ করছেন। কানাডা প্রবাসীদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়ে গছে।

নাহিদার বাবা ডাঃ আবদুস সোবহান ছিলেন শেখ মুজিবের ব্যক্তিগত চিকিৎসক। এই রাষ্ট্রদূতের চাটুকারিতা এই পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তিনি ২০২২ সাল থেকে নিজের নামের আগে শেখ ব্যবহার করা শুরু করেন !

শেখ হাসিনা ২০২৩ সালে কাতার সফরে গেলে ওই সময় জর্ডানের রাষ্ট্রদূত পদে থাকা নাহিদা প্রটোকল ভেঙে কাতারে গিয়ে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানান। জর্ডানেও তিনি বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন। জর্ডানে বাংলাদেশি কর্মীদের এজেন্টদের থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিতেন তিনি।

অবিলম্বে নাহিদাকে কানাডা থেকে প্রত্যাহার করে আইনগত ব্যবস্থা নিতে বিলম্ব হলে হাই কমিশন ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে স্থানীয় বাংলাদেশীরা !

একটি রাজনৈতিক দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টাকে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্যসচিব বানানোর রাতভর চেষ্টা

নিজস্ব বার্তা পরিবেশক

বিএনপি’র কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা কমিটির নির্বাচিত সদস্য এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা ও প্রতিবেশি দেশের গোয়েন্দা সংস্থার বিশ্বস্ত বিজন কান্তি সরকারকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহম্মদ ইউনুসের মুখ্যসচিব পদে নিয়োগ দানের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান অফিসে শুক্রবার দিবাগত গভীর রাত অবধি দফায় দফায় মিটিং চলে। পরিকল্পনা মোতাবেক রবিবার সকালে সচিবালয়ে শত শত বঞ্ছিত কর্মকর্তা যখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঘেরাও করবে, ঐ ফাঁকে বিজন কান্তি সরকারের সারসংক্ষেপ জনপ্রশাসন সচিবকে দিয়ে সাক্ষর করিয়ে তা প্রধান উপদেষ্টার কাছে নিয়ে যাওয়া হবে। জানা গেছে, এইসকল পরিকল্পনার সাথে জড়িত আছেন চেয়ারপারসনের পিএস (অব. যুগ্মসচিব) আবদুস সাত্তার, আবদুল বারী (অব. যুগ্মসচিব), কামরুজ্জামান প্রমুখরা।

উল্লেখ্য গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা অফিসার্স ক্লাবে পদোন্নতি বঞ্ছিত অফিসারদের একটি ওপেন সভা অনুষ্ঠিত হয়। তাতে রবিবার দিন সচিবালয়ে যাওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। বিগত সরকারের সচিবদের ও চুক্তিভিত্তিক নিয়োজিতদের অপসারণ করে বঞ্ছিতদের পদোন্নতি দিয়ে ঐসকল পদে বসানোর জন্য সর্বোচ্চ চাপ দেয়া হবে। কিন্তু এই মিটিংয়ের পরে রাতভর গুলশানের কাশিম বাজার কুঠিতে চলে বিশেষ এক ব্যক্তিকে বসানোর তৎপরতা।

অন্তর্বতী সরকারের প্রথম সপ্তাহে বঞ্ছিত কর্মকর্তারা জনপ্রশাসন সচিবের কাছে বার বার ধর্ণা দিতে থাকেন, চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন, যাতে করে অতিদ্রুত ১৬ বছর ধরে জমে থাকা বঞ্ছিতদেরকে দ্রুত তাদের প্রাপ্য পদোন্নতিগুলি দিয়ে বিগত আমলের সুবিধাভোগিদের সরিয়ে ঐসব পদে বসানো হয়। কিন্তু জনপ্রশাসন সচিব হিসাবে বসে আছেন পতিত লীগ সরকারের প্রতিভূ সচিব মেজবাহ উদ্দিন, যিনি আওয়ামী বুদ্ধিজীবি সাবেক সচিব কামাল নাসের ভাগিনা। মেসবাহউদ্দিন ডিভাইড এন্ড রুলের মাধ্যমে বঞ্চিত অবসরপ্রাপ্ত গ্রুপ এবং সার্ভিং গ্রুপের মধ্যে বিবাদ লাগিয়ে দিতে সমর্থ হন। বিএনপি চেয়ারপারসনের পিএস পদে কর্মরত অবসরপ্রাপ্ত যুগ্মসচিব আবদুস সাত্তারকে ভজিয়ে তিনি ৮২/৮৩ ব্যাচের অবসরপ্রাপ্তদেরকে পদোন্নতি এবং সচিবালয়ে পদায়নের টোপ দেন। ফলে বঞ্চিতরা ভাগ হয়ে যায় অবসরপ্রাপ্ত এবং সার্ভিং দুই গ্রুপে। ১০-১৫ বছর আগে অবসরপ্রাপ্তরা সার্ভিস জুনিয়রদেরকে দমিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও সার্ভিংরা তা মানতে নারাজ। এক্ষত্রে কতগুলি বিষয় বিবেচনার দাবী রাখে:

এক) ১৯৮২/৮৩ ব্যাচের যে সকল কর্মকর্তারা ১০-১৫ বছর আগে অবসরে গেছেন বা যাদেরকে অবসরে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে, তাদের এখন বয়স ৭৫-৮০র মধ্যে। অনেকেই তারা আলঝাইমার ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন। এ অবস্থায় তাঁরা সরাসরি সচিবের চেয়ার বসতে চাইছেন এত বছর পরে। এদেরকে মন্ত্রণালয়ের সচিবের চেয়ারে বসাবেন, নাকি বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্থা, কমিশন বা রাষ্ট্রদূত করবেন, তা বিবেচনার দাবি রাখে।

দুই) ১৯৮২ ব্যাচের প্রথম কর্মকর্তা শেখ আব্দুর রশিদকে সামনে রেখে পেছনে ৮২/৮৩ বিশেষ ব্যাচ বা ৮৪ ব্যাচের ৫০/৬০ জন অবঃরা লাইন দিয়েছেন-জুনিয়রদের হঠিয়ে সচিব হতে! সচিব পদে বসানোর এই কুতৎপরতায় সাংঘাতিকভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বর্তমানে যারা সচিব হওয়ার কথা তারা। এত বয়স, চিন্তা, চেতনার ব্যবধানে সচিবালয়ের পরিবেশ অস্থির হওয়ার কথা। অনেকটা নানা-নাতির মত!

তিন) সরকারী চাকরি শেষে যারা রাজনৈতিক পদে কাজ করছেন অর্থাৎ এমনকি নির্বাচিত দলীয় পদ হোল্ড করছেন সেরকম ব্যক্তি যদি মুখ্য সচিব হতে চায়, তবে সেটা কতটা সুস্থ মাথার কাজ তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। কেননা রাজনীতিতে চলে গেলে আর সরকারি চাকরিতে কেন সাংবিধানিক সংস্থাতেও ফেরা যায় না। ওনাদের জন্য কেবল বাকী থাকে এমপি মন্ত্রী হওয়া।

চার) PMRS নামে বিএনপি’র একটি বুদ্ধিবৃত্তিক সংগঠন আছে সেখানে যে সকল অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আছেন, তারা অলরেডি রাজনীতির ময়দানে দলীয় পতাকা নিয়ে নেমেছেন, তারাও সচিব হতে চান! কিন্তু কি করে এটা সম্ভব? এরপরে কি আর সচিবালয়কে সরকারি দপ্তর বলা যাবে, নাকি রাজনৈতিক সংগঠন?

পাঁচ) বর্তমানে যারা সচিব আছেন বিসিএস ১৩ ব্যাচের এবং এরপরে ১৫ ব্যাচের আসছে, এরা জয়েন করেছে ১৯৯৬ সালে; আর ৮২ ব্যাচের কর্মকর্তারা জয়েন করেছেন ১৯৮২ সালে। বয়সের এত বিশাল ব্যবধানে কেউ কখনও চাকরি করেছে?

ছয়) ১৯৮২ বা তার আশেপাশের যে ব্যাচগুলির অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা আছেন, তারা বর্তমানে সচিবালয়ের সিস্টেম সম্পর্কে বিশেষ করে ই-নথি, ই-গভর্ণেন্স সম্পর্কে একেবারেই অজানা এবং তাদেরকে বসালে কি তারা আবার সাবেকী মডেলে ফিরে যাবেন?

সাত) বর্তমানে মাঠে যারা কর্মরত আছেন, তাদের সঙ্গে তাদের সমসাময়িক ব্যাচগুলির যেরকম যোগাযোগ বা সম্পর্ক, তার মধ্যে যদি ১৫/২০ বছরের সিনিয়রর ঢোকে, তবে মাঠ প্রশাসনে সাংঘাতিক গ্যাপ তৈরি হবে।  

আট) বৃদ্ধ অবঃ অফিসারদের এই চুক্তিভিত্তিক প্রত্যাবর্তন কি কেবল সচিবালয়েই সুযোগ দেয়া হবে, নাকি অন্যান্য সার্ভিসে এবং ক্যাডারেও দেয়া হবে? এই বৈষম্য দূরীভূত হবে কি করে?

নয়) ইন্টার সার্ভিস রিলেশন তথা সামরিক বাহিনী পুলিশ বাহিনী অন্যান্য যে সকল ফোর্সেস আছে, তাদের প্রধানদের চেয়েও এই অবসরপ্রাপ্ত চুক্তিভিত্তিক সচিবরা অনেক সিনিয়র হবে, ফলে কার কথা কে শুনবে। ভেঙ্গে পড়বে রাষ্ট্রীয় প্রটোকল ব্যবস্থা।

দশ) বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদেরকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু অবসরের পরে সচিবের পদে বসানোর কোনো নজীর নাই। তো এই নজীরবিহীন তান্ডব করে কার উপকার হবে, নাকি অন্তর্বতী সরকারকে বিপদে ফেলতে এটি একটি স্যাবোটেজ মাত্র।

জুনিয়রদের দাবী, সার্ভিংদের প্রথমে পদোন্নতি দিয়ে পদায়ন করা হোক, তারপরে সিনিয়র ব্যাচের রিটায়ার্ড অফিসারদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিয়ে বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্থা, কমিশন, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, দূতাবাসে নিয়োগ করে প্রতিকার ও সম্মনিত করা যায়।

মানি লন্ডারিংয়ে অভিযুক্ত হাসিনার স্বার্থ রক্ষায় তৎপর চাঁদাবাজ টিটু রহমানের নাগরিক টিভি বয়কটের ডাক

কানাডা প্রতিনিধি:
সম্প্রতি শেখ হাসিনার আরব আমিরাত সফরের সময় সেখানকার শারজাহ কোর্টে মানি লন্ডারিং মামলায় হাজির দেয়া এবং একদিনের আটকাদেশ নিয়ে শেখ হাসিনার পক্ষে দাড়িয়েছেন কানাডা ভিত্তিক অনলাইন নাগরিক টিভির পরিচালক টিটু রহমান। প্রতিদিন তিনি শেখ হাসিনার পক্ষে ক্যাম্পেনে নেমেছে এই বলে যে, শারজাতে মানি লন্ডারিং হয়েছে, কিন্তু হাসিনা জড়িত নয়। তার বিয়াইকে গ্রেফতার করে প্রমান দিয়েছেন। মানি লন্ডারিং নিয়ে হাসিনাকে নাকি খামাখাই জড়াচ্ছে মহল বিশেষ। তার মতে এটি একটি প্রোপাগান্ডা মাত্র। টিটু এখন জানপ্রাণ দিয়া চেষ্টা করছে- হাসিনাকে নির্দোষ প্রমান করতে! এ নিয়ে অনেককে হুমকি ধামকিও দিয়েছে- এই প্রচারণার যারা করবে, সে নাকি তাদেরকে নির্মুল করবে। তার এ নয়া অবস্থানের পরে সংশ্লিষ্টদের ধারণা, সম্ভবত কিনি মোটা অংকের বিনিময়ে সরকারের সাথে আঁতাত করেছেন।

ইতোমধ্যে তার বিতর্কিত কর্মকান্ডের জন্য টিটু রহমান ওরফে তোঁতলা টিটু চিহ্নিত চাঁদাবাজ হিসাবে স্থানীয় কমিউনিটিতে পরিচিতি পেয়েছেন। এক সময় বাংলাদেশে ধর্ষণ মামলা থেকে বাঁচতে গলাকাটা পাসপোর্টে তিনি কানাডায় আসেন। সম্প্রতি একটি অনলাইনে টিভি চ্যানেল খুলে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন ‘নাগরিক টিভি’ নামে, কেননা ২০০৮ সাল থেকে ‘নাগরিক টিভি’ নামে বাংলাদেশে একটি রেগুলার স্যাটেলাইট চ্যানেল চালু আছে, যা টিভি উপস্খাপক ও পরে ঢাকা উত্তরের মেয়র মরহুম আনিসুল হক সৃষ্ট। ঐ নামটি নকল করে টিটু রহমান গোটা বিশ্বের বাংলাদেশ কমিউনিটির সাথে প্রতারণা করে আসছেন। জানা গেছে, সম্প্রতিক আলোচিত মুনিয়া হত্যাকাণ্ডকে পুঁজি করে বসুন্ধরার গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে মুখ কুলুপ দিয়ে আছেন এই প্রতারক।

দীর্ঘদিন ধরে শেখ হাসিনার ভোটবিহীন স্বৈরশাসনের যাতাকলে পিষ্ট বাংলাদেশের জনগন যখন মুক্তির লড়াইয়ে রত, ঠিক যেসময় দেশের মানুষের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, সেই সময় প্রবাসে অবস্খানরত কয়েক অবসরপ্রাপ্ত বাংলাদেশী শিক্ষক, সেনা কর্মকর্তা, এবং কথা বলতে চায়, এমন ব্যক্তিদের নানা কায়দায় উপস্খাপন করে টিটু রহমান তার প্রতারণার এই বাক্স খোলেন। রাতারাতি জনপ্রিয়তা পেতে তোঁতলা টিটু বাংলাদেশের পরিচিত একটি টিভি চ্যানেলের নামে খোলায় অনেকেই ভুল করে এটাকে মুল টিভির শাখা মনে করা শুরু করেন। কেউ তো আর জানে না, এটি নকল মাত্র! পরবর্তীতে বিএনপি সরকারের সাথে কাজ করা এক মিডিয়া ব্যক্তির অনুকম্পায় করে কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জোগাড় করে কয়েকটি টকশো আয়োজন করেন টিটু রহমান। কিন্তু তার না আছে সাংবাদিকতা বা উপস্খাপনের অভিজ্ঞতা এবং যোগ্যতা, না আছে সাধারণ জ্ঞান, শারীরিকভাবে তোতলা হওয়ার কারণে তিনি কথা বলতেও পারেন না, কি প্রশ্ন করতে হবে তাও জানেন না। ফলে অনুষ্ঠানের মান চলনসইও হয় না। তদুপরি কিছু মানুষ তো এটা দেখে।

দেশে সীমহীন দুর্নীতি, লুটপাট, মানি লন্ডারিং, গুম খুন ও অত্যাচারে সরকারের বিপক্ষে যখন জনগণের অবস্থান, তখন টিটু সেটাকে কাজে লাগিয়ে সরকার বিরোধী অবস্থান নেয়। বিভিন্ন টক’শোর আয়োজন করে সরকারের সমালোচনা করে লাইম লাইটে আসতে চায়। প্রথম থেকে অর্ধ শিক্ষিত তোঁতঁলা টিটুর উদ্দেশ্য ছিলো অনলাইন চ্যানেলটি ব্যবহার করে ধান্দার মাধ্যমে টাকা কামানো। তার ওই উদ্দেশ্য সফল হয় মুনিয়া ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি হাতে নেয়ার মাধ্যমে। সাবেক এক আমলার মাধ্যমে মুনিয়া ও তার প্রেমিক বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের কিছু গোপন ছবি ও তথ্য পায় টিটু। ওই ছবি ও তথ্য নিয়ে তার চ্যানেলে নিয়মিত টকশোর আয়োজন করে বিষয়টি বসুন্ধরার নজরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং এক পর্যায়ে সফল হয়। মুনিয়া ইস্যু নিয়ে আনভীরের লোকজন যোগাযোগ করে নাগরিক টিভির সাথে। মুনিয়া ইস্যুতে চুপ থাকার শর্ত হিসাবে কানাডায় একটি স্যাটেলাইট টিভি স্টেশন বানিয়ে দেয়ার দাবি করে তোঁতলা টিটু। আনভীর রাজী হয় এবং প্রাথমিক পর্যায়ে বিশ হাজার ডলার প্রদান করে টিটুকে। পরে নির্ধারিত সময়ে টিভি স্টেশন স্থাপন না করে আনভীর যোগাযোগ বন্ধ করে টিটুর সাথে। টিটু বুঝতে তার স্যাটেলাইট টিভির স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না, তাই আবারো মুনিয়া ইস্যুতে সরব হয়েছে ওই বাটপার। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সফর সঙ্গী হয়ে আনভীর কি ভাবে আরব আমিরাতে গেলো সেটা নিয়ে অনলাইন গরম করার চেষ্টা করছে, যাতে আনভীরের কাছ থেকে আরো টাকা আদায় করতে পারে।

’নাগরিক টিভি’ নামের ওই ভুয়া চ্যানেলের সাথে জড়িত ছিল তোঁতলা টিটুসহ তিন জন। বসুন্ধরার আনভীরের কাছ থেকে পাওয়া বিশ হাজার ডলারের ভাগ অন্য দুইজনকে না দিয়ে একাই হজম করে ফেলে টিটু। এনিয়ে তাদের মধ্যে গন্ডগোল থেকে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে এবং টিটুর সাথে তারা সম্পর্ক ছিন্ন করে।

টিটু রহমান দেশের বিশিষ্ট লোকজনকে ফোন করে এসএমএসের মাধ্যমে নিজেকে সরকারের কাছের লোক পরিচয় দিয়ে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা পরিশোধ না করলে তার নাগরিক টিভির মাধ্যমে প্রতিবেদন তৈরি করে সুনাম বিনষ্টের হুমকি দেয়। এমন কয়েকটি অনুষ্ঠানও সে করেছে।

জনগণের আবেগ নিয়ে ব্যবসা করায় প্রতারক তোঁতলা টিটুর নাগরিক টিভির ফেইসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল সবাইকে বয়কট করা উচিত বলে মতামত ব্যক্ত করেন একসময় টিটুকে প্রমোট করা ওই মিডিয়া ব্যক্তিত্ব।

লন্ডনে কর্ণেল শহীদ খানের পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন, বাংলাদেশ দূতাবাসের বাধা


লন্ডন প্রতিনিধি

আলোচিত সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্ণেল (অব.) শহীদ উদ্দিন খান যুক্তরাজ্যের স্বনামধন্য পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করেছেন। তার ওই ডিগ্রী অর্জন ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকার লন্ডনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসকে ব্যবহার করেও ব্যর্থ হয়েছে শেখ হাসিনার সরকার।

জানা গেছে, গত ২৮ জানুয়ারী ২০২২ তারিখে যুক্তরাজ্যের পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে “Military Intervention and Its Impacts on the Democratic Process of Bangladesh” এই topic এর উপর অত্যন্ত সফলতা ও মর্যাদার সাথে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেছেন ড. কর্ণেল শহীদ খান। তবে তার ওই ডিগ্রী অর্জনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাড়িয়েছিল বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকার।

অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বব্যাপী “Mother of Mafias” খেতাবে ভুষিত করে বিশ্বব্যাপি তা পরিচিত করার একমাত্র কপিরাইট বাহক ড. কর্ণেল শহীদ খান। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপপ্রয়োগ করে কর্নেল শহীদ খানকে সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে সরকারের পক্ষ থেকে লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসের হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসমিন ও মিনিস্টার কনসুলার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল লুৎফুল হাসানের পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী পরিচয় দিয়ে ফেরদৌস খান ওরফে অক্টো খান নামে এক ব্যক্তি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক Dr. Tamsin Bradley কে গত ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখে ই-মেইল করেন। ড. কর্ণেল শহীদ খানকে পিএইচডি করার সুযোগ না দিতে সরকারের পক্ষ থেকে তিনি এই অনুরোধ করেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ হাইকমিশনারের অভিযোগ আমলে নেয়নি। রাষ্ট্রদূতের সব অপচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে ওই বিশ্ববিদ্যালয় তার গবেষণার সুউচ্চ মান ও তার মেধায় অভিভূত হয় এবং তিনি অত্যন্ত মর্যাদা, যোগ্যতা ও সফলতার সাথে ডক্টরেটের ডিগ্রী লাভ করেন।

এ প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে ড. কর্ণেল শহীদ উদ্দিন খান বলেন, মাফিয়া চক্রের দল কখনও শিক্ষা ও জ্ঞান-প্রজ্ঞার মান বুঝবে না ও তার মূল্যায়নও করবেনা। British Legal Firm থেকে হাইকমিশনার মুনা তাসনীমকে Legal Notice প্রেরণ করা হয়েছিল, যার প্রথম জবাবে বাংলাদেশ সরকার থেকে উত্তর পাবার জন্য ড.কর্নেল শহীদ খানের সলিসিটর থেকে ১৫ দিনের সময় চান, যা তাকে দেয়া হয়। ১৫ দিন পরে সে তার জবাবে যা বলেছে তা অপ্রাসঙ্গিক। এখন, ড. কর্নেল শহীদ খানের প্রশ্ন হলো, যেখানে অক্টো খান তার ইমেইলে মুনা তাসনীম ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল লুৎফুল হাসানের নাম উল্লেখ বা Refer করেছে, সেখানে মুনা তাসনীম Legal Notice এর জবাব দেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে জবাব নেয়ার জন্য ১৫ দিনের সময় চেয়ে অনুরোধ কেন করলো?
British Legal Firm থেকে অক্টো খানকেও ২টি Legal Notices পাঠানো হয়েছিল, কিন্তু সে কোনটারই জবাব দেয়নি, বরং সে তার যুক্তরাজ্যের ৪০ বছরের ঘর-সংসার ফেলে বাংলাদেশে পালিয়ে গিয়ে শেখ হাসিনার অফিসে জায়গা করে নিয়েছে।

ক্যান্সারের চিকিৎসা, পারিবারিক কলহ নিষ্পত্তি এবং জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে পৌছেছেন প্রধানমন্ত্রী হাসিনা


আগামী ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ভাষণ দানের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশের মিডনাইট প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্টের নিউইয়র্কে পৌছেছেন। এসময় তিনি তার শারীরিক চিকিৎসা করাতে পারেন এবং ক্ষমতার উত্তরাধিকার নিয়ে সৃষ্ট পারিবারিক বিবাদ নিষ্পত্তির চেষ্টা হতে পারে।

গত জুলাই মাস থেকে সামাজিক মাধ্যমে দেশ জুড়ে চাউর হয়েছে, শেখ হাসিনা মরণঘাতি ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত। আর এরই চিকিৎসা নিতে তিনি ঘন ঘন যুক্তরাজ্য সফর করে থাকেন। খবরের প্রথম সূত্র হিসাবে প্রধানমন্ত্রীর মেডিকেল টিমের এক সদস্য নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, পরে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সচিবরা এটি নিশ্চিত করেন। ১৯ জুলাই ইউরোপীয় অঞ্চলের বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূতদের একটি সভার অস্বাভাবিক অযুহাত দেখিয়ে শেখ হাসিনা লন্ডনে যান। এরপরে টানা ১৩ দিন তিনি কোথায় ছিলেন সে সম্পর্কে জাতিকে সরকারীভাবে কিছু জানানো হয়নি। তখনই গুজব ছড়িয়ে পড়ে তিনি বেঁচে আছেন কি না। এর ফলশ্রুতিতে দিশাহারা হয়ে তার মন্ত্রিসভার বেশির ভাগ সদস্য বিদেশে পড়ি জমান অথবা দেশের মধ্যেই লুকিয়ে থাকেন বলে জানায় সচিবরা। দলের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং আর ২/১ জন মন্ত্রী ব্যতিত সচিবালয়ের অফিসে মন্ত্রীদের কামরাগুলি খা খা করতে থাকে। দলীয় বিনাভোটের এমপিরা এবং লুটপাটে ওস্তাদ নেতারা অনেকেই ব্যাংকক, কোলকাতা, দুবাই, সিঙ্গাপুরে গিয়ে অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন।

অবশেষে লন্ডনে খোঁজ নিয়ে জানা যায় যে, ২২ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত লন্ডনে পাকিস্তানীদের নির্মিত বুপা ক্রমওয়েল হসপিটালের ক্যান্সার সেন্টারে তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো সরকারী মাধ্যম থেকে বিষয়টি জনগনকে জানানো হয়নি, বা খবরটির স্বীকার অস্বীকার কিছুই করা হয়নি। এসময়কালে আরো একটি খবর জানা যায় যে, তাঁর আসন্ন মৃত্যুর পরে ক্ষমতার উত্তরাধিকার নিয়ে লন্ডন, ফিনল্যান্ড, এবং ঢাকায় একাধিক বৈঠক হয়েছে। তাতে তিনি চান তার কন্যাকে উত্তরাধিকার করতে, অন্যদিকে ছোট বোন চান নিজে ক্ষমতায় বসতে। কেননা প্রধানমন্ত্রী অতীতে কথা দিয়েছিলেন- চতুর্থবার ক্ষমতায় বসার এক বছরের মধ্যে ছোটবোনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবেন। ছোটবোন এখন সেই ঘোষণা পূরণ চান। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সেকথা থেকে বার বার সরে যাচ্ছেন। তাই পারিবারিক কলহ জটিল আকার ধারণ করেছে।

বুপা হাসপাতালের একটি সূত্রে জানা যায়, এটি কোলোন ক্যান্সার এবং চতুর্থ ধাপের।

এর আগে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ অধিবেশনে এসে ২৫ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের একটি নাম না জানা হাসপাতালে কোলোন সার্জারি করেন, যদিও তারা প্রকাশ করে পিত্তথলির অপারেশন বলে। এ প্রসঙ্গে ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৭ নিজের ফেসবুক পেজে স্ট্যাটাসে পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেন, ‘গত সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে মা’র গল-ব্লাডারের সার্জারি হয়। আমাদের পাশের হাসপাতালে আমার এক ডাক্তার বন্ধুই সার্জারিটি করেন। সার্জারিটি অত্যন্ত সফল ছিল। পরদিন সকালেই মা বাসায় ফিরে আসেন। তিনি এখন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন।’ কিন্তু তিনি এর আগে প্রথমবার বিরোধী দলে থাকতে কানাডায় পিত্তথলি অপসারণ করেছিলেন বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। যাই হোক, প্রায় তিন সপ্তাহ পরে তিনি মোটা কাপড়ে শরীর ঢেকে দেশে ফিরেন, তবে দীর্ঘ প্রায় দু’মাস বাসভবনের ভিতরেই কাটান, হয়ত খুব অল্প সময়ের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে যেতেন সপ্তাহে বা পক্ষে একবার। আরও পেছনে গেলে পাওয়া যাবে ঢাকা মহানগর আওয়ামীলীগের এক প্রভাবশালী এমপি যিনি গণভবন-ঘনিষ্ট এবং পরে একজন প্রখ্যাত সনোলজিস্ট কনফার্ম করেন যে, তার শরীরে মরণঘাতি ক্যান্সার বাসা বেঁধেছে ২০১২ সালের জানুয়ারী মাস থেকে, অবশ্য সেই থেকে চিকিৎসায় তা নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কিন্তু ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর থেকে রোগটি আবার বেপরোয়া হয়ে উঠলে প্রায় তিন মাস অঘোষিত ছুটিতে থেকে চিকিৎসা ও নিবিড় পরিচর্যায় থাকেন। এর কিছুদিন পরেই তিনি লন্ডনে গিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিজের শারীরিক অবস্থা যাচাই করেন এবং চিকিৎসা নিতে শুরু করেন। আমেরিকা ইউরোপ যেখানেই তিনি যান না কেনো, লন্ডনে তার কিছুদিন থাকতেই হবে। এবছর মে মাসে ১০ দিন এবং আগস্ট মাসে প্রায় একমাস লন্ডনে চিকিৎসা নেন। ক্যান্সারের বিষয়টি এবারে নিশ্চিত করেছেন তার চিকিৎসা টিম এবং গোয়েন্দা সূত্র। আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক দু’দিন আগে প্রথম জানান দিলেন, প্রধানমন্ত্রী অসুস্থ অবস্থায় নিউইয়র্কে গেছেন, তবে কি অসুস্থতা তা পরিষ্কার করেননি!

জানাগেছে, চলমান জাতিসংঘ সফরকালে তিনি সাধারণ পরিষদের অধিবেশেনের ফাঁকে ফাঁকে অন্তত দু’টি হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসা নিবেন, এরমধ্যে একটি হচ্ছে ক্যান্সারের চিকিৎসা। এর পাশাপাশি ক্ষমতার উত্তরাধিকার প্রশ্নে পারিবারিক বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য বোন, কন্যা ও অন্যান্যদের সাথে সমঝোতার আরও চেষ্টা চালাবেন। এমনকি প্রতিবেশী দেশের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎকালে এ বিষয়ে তার প্রভাব কাজে লাগানোর চেষ্টা করতে পারেন।

‘মোবাইল চোর’ বলে ৫০ সাংবাদিককে আটকে দেহ তল্লাশি করলেন শমী কায়সার!

24 Apr, 2019

নিজের দুটি স্মার্টফোন চুরি যাওয়ায় প্রায় অর্ধশত সংবাদকর্মীকে আধঘণ্টারও বেশি আটকে রেখেছেন অভিনেত্রী শমী কায়সার। এ সময় তিনি সাংবাদিকরা মোবাইল চুরি করেছে বলে অভিযোগ করেন এবং তার নিরাপত্তাকর্মীদের দিয়ে সংবাদকর্মীদের দেহ তল্লাশিও করান। এ সময় কেউ কেউ বের হতে চাইলে ‘চোর’ বলে ওঠেন শমী কায়সারের নিরাপত্তাকর্মী। শমী নিজে গেটে দাড়িয়ে যান, এতে বিক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন সংবাদকর্মীরা। ক্ষোভ প্রকাশ করেন অনুষ্ঠানস্থলে। পরে অবশ্য সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় অজ্ঞাতনামা কোনো এক চোর ফোন দুটি সরায়। ঘন্টাখানেক হৈচৈয়ের পরে আয়োজকরা ক্রমাগতভাবে ক্ষমা চাইতে থাকে। এসব গন্ডগোলের মধ্যে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি তথ্যমন্ত্রী হাসনা মাহমুদ উপস্থিত হননি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এ ঘটনা ঘটে। প্রায় অর্ধশত ফটো ও ভিডিও ক্যামেরা এবং শতাধিক মানুষের সামনে চুরি হয় ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই- ক্যাব) প্রেসডেন্ট শমী কায়সারের দুটি স্মার্টফোন।

শমী কায়সার জানান, ফোন দু’টিতে তার অনেক গুরুত্বপূর্ন ডকুমেন্ট ভিডিও রয়েছে, যা ফাঁস হয়ে যাবার ভয়ে তিনি অস্থির হয়ে পড়েছিলেন!

নির্বাচনের পরে সম্পর্কের নতুন ভারসাম্য

1 2 3 7